দ্বারভাঙ্গার মহারাজা লছমীশ্বর সিংহ বাহাদুর জি, সি, এস, আই’র মৃত্যু উপলক্ষ্যে

(১)
পড়িল ভাঙিয়া এক ওই মহা মহীরুহ!
সর্বলোক-প্রিয়কারী ছিল সম কামদুহ!
শুভ্র যশঃপুষ্পরাশি রেখেছিল আলো করি;
উঠিত উথলি’ যার সুগন্ধ দিগন্ত ভরি।
পৌরুষ, দাক্ষিণ্য, দয়া, রসপূর্ণ ফলগুচ্ছ
রেখেছিল করি তারে উচ্চ হ’তে আরো উচ্চ।
সতত উন্মুক্ত কর শত দিকে প্রসারিত;
চির-স্নিগ্ধ চির-রম্য ছায়াখানি অবারিত।
শতলক্ষজনাশ্রয় ভাঙিয়া পড়িল আজ!
অকরুণ দেবতার অকালে উদ্যত বাজ!

(২)
এ অত্যাচারের মোরা এস প্রতিশোধ লই;
প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মোরা হব সবে মৃত্যুঞ্জয়ী।
মৃত্যু? কার মৃত্যু হয়? দেহেরি কি এত মান?
গুণরাশি চিরোজ্জ্বল চির রহে বর্ত্তমান।
রোপিব তাহারি বীজ লয়ে মোরা শত স্থলে,
রক্তবীজ-বংশ-সম বাড়িবে তা’ দলে দলে!
নিমেষে একের স্থানে হইবে সহস্ৰ জন;
-মৃত্যু কত অগ্রসর হইবে করিতে রণ?

(৩)
লইতে এ ব্রত যদি মোরা সবে নাহি পারি,
কেন তবে বৃথা হায়, বর্ষণ এ অশ্রুবারি?
শোকের উপরে শোক, আঘাত, আঘাত ‘পরি,
সহুক নীরবে তবে, জননী জনম ভরি’।
এক্‌টী একটী করে হৃদয়ের অস্থি তার
পড়িছে পড় ক খসে, কিবা তায় ক্ষতি কার?
কতকাল জীর্ণ গৃহ প্রকোপেতে ঝটিকার
রহে বাঁচি, সংস্কার কভু না হইলে তার?

১৩০৫। পৌষ।