স্মরণীয় দিন এই জীবনে এখন,
পালিতে নারিব ব্রত, এ কথা কেমন!
পুণ্যময়ী একাদশী, এবে বড় ভালবাসি,
এ কি কষ্ট? কিছু নয়, বোলো না এমন;
এই স্মরণীয় দিন জীবনে এখন।
পক্ষান্তরে এক দিন বঙ্গবিধবার-
পবিত্র সুখদময়; এতে কষ্ট কার?
এ দশা হয় নি যবে, আমি ভাবিতাম তবে,
পোড়া একাদশী কেগো করেছে বিচার;-
-দুঃখিনী, অভাগী তরে-বঙ্গরিধবার।
করেছে নিয়ম এ যে, বুঝেছি এখন,
বঙ্গবিধবার বন্ধু প্রকৃত সে জন;
কামনা করিতে নাশ, করিতে সংযমাভ্যাস,
সহায় পুণ্যের পথে নাহিক এমন;
এতে যার কষ্ট হয় সে মেয়ে কেমন?
বোঝে না যে পাপ পুণ্য দুগ্ধপোষ্য বালা,
তারি পক্ষে একাদশী মৰ্ম্মান্তিক জ্বালা।
সমাজের নেতা যারা, কেমনে দেয় গো তারা,-
এ বিধি তাহারে, এ যে দাবানল জ্বালা,-
তার বুকে; এ আগুনে পুড়ে মরে বালা।
নহি আমি কচি মেয়ে বোলো না ও কথা,
ভেবো না তোমরা কিছু, পেয়ো নাক ব্যথা;
অম্লান বদনে আমি, যাপিব দিবস যামী
-পক্ষান্তরে এক দিন, একি বড় কথা!
ভেবো না তোমরা ওগো, পেয়ো নাক ব্যথা।
গত কথা মনে করে দেখ এক বার,
কতই না উপবাস গিয়াছে তাঁহার;
বারেক শরীর প্রতি, চাহিতে হয় নি মতি,
করেছেন দেহোপরি কত অত্যাচার;
সাধ করে সহেছেন কত অনাহার!
মাসে দুটো একাদশী, কিছুই ত নয়-
তার কাছে; এরে সবে কষ্ট কিসে কয়?
শয্যায় শুইয়া আহা, দারুণ যাতনা যাহা
অকাতরে সহ্য করিয়াছে সে হৃদয়;
একাদশী তার কাছে কষ্ট কিছু নয়।
একাদশী প্রিয় সখী এখন আমার,
তাঁর কথা মনে পড়ে আজি বার বার;
কত না যাতনা হায়! পেয়েছেন এ ধরায়,
তেমন সহিষ্ণু কোথা দেখি নাই আর;
আমার এ একাদশী তুচ্ছ কাছে তার।
২৫শে আশ্বিন, ১৩০১।