“One Struggle more; and I am free.”
কত মাস বর্ষ ধরি অতি সযতনে
নিজ হৃদয়ের রক্ত করাইয়া পান
বক্ষোপরি রেখেছিল যারে, ভাবি মনে
নিখিলের শ্রেষ্ঠ রত্ন, হয় অবসান
অবশেষে এক দিন সে ভুল রজনী,
চলি যায় দলি বক্ষঃ ক্রূর পদাঘাতে
বক্ষের সে ধন। জাগাইয়া সুপ্তিমগ্ন
রুদ্ধ অভিমান-সর্প ক্রুদ্ধ অবমানে।
মর্মে মর্ম্মে শিহরিয়া নির্ঘুম আক্রোশে
লালায়িত হয়ে ওঠে প্রতিহিংসা তরে।
বলে সে উদ্ভান্ত স্বরে আপনারে স্মরি,
‘তোমারো মানব আত্মা, হয়ো না বিস্তৃত
নিজ মূল্য তুমি কভু, হায় সহিয়ো না
তার অবমান।’ কিন্তু দুর্বল হৃদয়!
নিজে সে জড়িত বন্দী নিজ মায়াজালে।
অধীন যে চির, তার বৃথা অভিমান!
মোহের অধীন চেয়ে অধীন জগতে
কোথায় কে আছে আর? এত শক্তি আর
কোথায় কে ধরে? পারে লইতে কাড়িয়া
সব স্বাধীনত। হায়! এমন কে আর?
তীক্ষ্ণ শত অবমান ক্লিষ্ট বক্ষে বহি’,
নিমেষে আত্মাভিমানে দিয়া জলাঞ্জলি,
ছোটে সে মোহের পিছে; যায় সে আবার
পলাতকে ফিরায়ে আনিতে গৃহে তার।
যত সে উদাম করে, আঘাত নির্ম্মম
সহে সে ততই; পড়ে রক্ত ঝরি ঝরি
ছিন্ন বক্ষতন্ত্রী-মুখে; রহে যতক্ষণ
বিন্দু শক্তি, করে সে সমর প্রাণপণে।
হায় মোহ! কিন্তু সে ভুলায় আপনারে
‘পালিতেছি এ আমার কর্তব্য আপন।’
প্রতি পরাজয় অন্তে ভগ্ন আশা লয়ে
ভাবে সে ‘করিব চেষ্টা আর একবার’।
ভাবে, তার পূর্ণ হবে কৰ্ত্তব্য তা হ’লে,
দায়িত্ব হইতে তার হবে সে স্বাধীন!
হায়! কিন্তু শেষ চেষ্টা করে সে কখন্?
ফিরে পায় কখন্ সে স্বাধীনতা তার?
-অবশিষ্ট রক্তকণা হয়ে আসে যবে
বক্ষোমাঝে অবিচল, তুষার-শীতল!
আসে ছেয়ে মরণের ঘন অন্ধকার
যবে হায়, নয়নের উপরে তাহার!
১৩০৬। শ্রাবণ। July, 1899.