নূতন রাগিণী

শুধুই গাহিতে গান যদি গো! জনম মম,
তবে দেবি! গানে মোর দাও সেই সুর,
যে সুরে মৃতেরো প্রাণে অমৃত-লহরী বহে,
যে সুরে জড়েরো করে অবসাদ দূর!

মরুতে জনমে তরু, পাষাণেতে বহে নদী,
অঙ্গার সে হ’য়ে যায় সহসা হীরক!
যে তীব্র উন্মন্ত স্থর তড়িৎ সঞ্চারি’ দেয়
হৃদয় হইতে হৃদে, ফেলিতে পলক।

এমন করিয়া শুধু গতানুগতের মত
কেবলি জ্যোছনা, পুষ্প, কল্পনা-বধূর
সহিতে করিয়া খেলা, জীবন স্বপ্নের মত
করিতে চাহি না আর সমাপ্ত মধুর

আমি অগ্রসর হ’ব সত্যের ধরিয়া হাত,
সূর্য্যের রশ্মির মত কিরণ যাহার;
নিখিল বিশ্বের সর্বব স্বচ্ছ মুকুরের সম,
সবাই হেরিবে তাহে চিত্র আপনার।

ক্ষুদ্র যশ অপযশ থাকে ক্ষুদ্র গৃহ-কোণে;
-এ সঙ্কীর্ণ সীমা মম দাও বাড়াইয়া;
কেবল আমারি তরে রেখো না অস্তিত্ব মম,
-আমারে অনন্ত-মাঝে দাও হারাইয়া।

ব্রহ্মাণ্ডের সাথে মম দাও এক করি দেবি!
দাও যোগ করি দেবি! হৃদয়ের তার;
ওই ক্ষুদ্র তৃণগাছি, ওরো সুখ, ওরো দুখ,
-অনুভব করি যেন আত্মায় আমার!

১৩০৫।