ও যেন কেঁদে না চলে যায়

সারা দিন কেঁদে কেঁদে, শ্রান্ত ক্লান্ত হয়ে বালা,
ঘুমায়ে পড়েছে তরুমূলে;
ধূলির্ধূসরিত আহা! কচি তনুখানি ওই,
মা’র মত কোলে নাও তুলে৷

এ সংসারে ওর হায়! আপনার কেহ নাই,
ছিল শুধু জননীর কোলে;
আজি সেই স্নেহময়ী, দুহিতারে একা রাখি,
সুরপুরে গিয়াছেন চলে।

এ জগৎ ওর কাছে, অকূল পাথার এবে,
কোথাও তো আশ্ৰয় নাই;
শুধুই কি তেসে যাবে? না না না না অভাগীরে
একটুকু কোলে দাও ঠাঁই।

দেখে ও মলিন মুখ, কার না বিদরে বুক,
কার চোখে নাহি আসে জল;
স্মরণলতিকা মরি! ভূমে যায় গড়াগড়ি,
কোলে তুলে ঘরে লয়ে চল্।

কাদায় ধূলায় মাখা চুলগুলি,
অযতনে লুটায়ে পড়েছে ধরাতলে;
আদরে গুছায়ে দিও, মু’খানি মুছায়ে দিও-
সযতনে আপন আঁচলে।

বুক পূরে স্নেহ দিও, মলিনতা ঘুচাইও,
কিছু না অভাব যেন পায়;
এ কঠোর সংসারের নিরদয় ব্যবহারে,
ও যেন কেঁদে না চ’লে যায়।

২২শে ভাদ্র, ১৩০১।