পরপারে

কে ভাঙ্গিতে পারে, এ সন্দেহ মোর,
যাইব কাহার কাছে;
বৃহৎ, গভীর- এ ভবসিন্ধুর
পরপারে কিবা আছে।

জীবনতরণী বাহিয়া সকলে
কোথা যাত্রা করিয়াছে?
কি আছে তথায়?কে কবে, কেহ ত
ফিরে নাহি আসিয়াছে।

কি রহস্যময়, কি দুর্জ্ঞেয় ইহা,
বুঝিতে পারি না আমি;
সমস্ত জগৎ এক ডোরে গাঁথা,
এই টুকু শুধু জানি।

কে সে কারীকর?- এ বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড
যে সৃজন করিয়াছে,
এ ব্রহ্মাণ্ড কার নিয়মের কাছে
শির নত করে আছে?

কে সে পাঠায়েছে ধরায় মোদের,
যাইব আবার কোথা?
এ প্রশ্নের মোর কে দিবে উত্তর
কোথা পাব সত্য কথা?

কত শত লোকে কত কথা বলে,
কেমনে বিশ্বাস হয়?
কেহ ত তাহারা, চোখে দেখেনিকো,
যাহা মনে লয়, কয়।

স্বপ্ন ছাওয়া শুধু এ ধরণী কি গো,
ঘুমায়ে স্বপন দেখি?
জীবন স্বপন,- কাটিয়া গেলে কি,
মরণে উঠিব জাগি!

এ বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড সৃজিত যাঁহার
পুত্তলী আমরা তাঁর,
অদৃশ্য হস্তেতে নাচায় মোদের,
ভেঙ্গে ফেলে সে আবার।

মাটীর শরীর, জীবনের শেষে
মাটীতে মিশিয়া যায়,
মাটীর পুত্তলী- এত গর্বব তার,
কি সে তা বুঝি না হায়!

১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৩০১।