‘নানা মুনি নানা মত,’
জটিল ধর্ম্মের পথ,
সত্য ঢাকা, মিথ্যা-আবরণে;
একই পরমেশ্বরে
খণ্ড খণ্ড ভাগ করে,
সৃষ্ট জীব, সৃজে লক্ষ জনে।-
প্রকৃতি যেমন যার,
সে তেমনি দেবতার
নির্ম্মাণ করিয়া পূজা করে;
যেটুকু ক্ষমতা যার,
করিবারে সুবিস্তার,
সেই তাহা চায়, অন্য ‘পরে।
যে হয় দুর্বল জন,
অনুগত সর্ব্বক্ষণ
অপেক্ষায় সবল জনের;
এইরূপে সৃষ্ট হয়
দলাদলি, বিশ্বময়;
-ধৰ্ম্মে একি অধর্ম্মের ফের?
সত্য, মানবের পাশে
মানবকে ল’য়ে আসে,
প্রেমের বাঁধন প্রাণে বাঁধে;
কিন্তু শুধু ধৰ্ম্ম নানা,
এ মিলনে করে মানা;
ঈশ্বরের সাধে বাদ সাধে।
সৃষ্টি আর সৃষ্টিকার,
কি সম্বন্ধ দুজনার,
তাহাও বুঝি না মোরা বড়;
দিয়া ভিন্ন ভিন্ন নাম,
বুচি শব্দ অভিধান;
জ্ঞান, শক্তি, চৈতন্য ও জড়।
ইহা কিছু নহে আর;
অনন্তের চারি ধার
মানব-মনের গণ্ডীদান
ক্ষুদ্র সাধারণ নরে,
পারিবে বল কি ক’রে
বৃহতের ধারণা ও ধ্যান?
* * * * * *
ক্ষুদ্র কি বৃহৎ হ’তে
পারে না কো কোনমতে?
-নিত্য এ দৃষ্টান্ত যথা তথা;-
ক্ষুদ্র নহে অশ্রদ্ধার;
-বৃহতের মূলাধার;
-“ঐক্য” এই জেনো সত্য কথা।
ক্ষুদ্রের সহিত যবে,
ক্ষুদ্রের মিলন হ’বে;
তখনই জন্মিবে বৃহৎ;
ভাঙা, গড়া, যোগাযোগ,
যে নামই তাদের হোক্,
-জগতেতে আছে দুটী পথ।
মিলন, বৃহত-সেতু;
বিচ্ছেদ, ক্ষুদ্রের হেতু;
-ভেঙে ফেল বিচ্ছেদের ঘর;
ত্যজি’ যত কুসংস্কার,
কর সত্য সারোদ্ধার,
হ’তে সর্ব্ব ধর্ম্মের ভিতর।
যার যাহা আছে ধন,
খুলে ফেল আচ্ছাদন,
দাও সবে সম অধিকার;-
সর্ব্ব তত্ত্ব সম্মিলনে,
আপনি হইবে ক্রমে,
নিত্য তত্ত্ব সূর্য্য আবিষ্কার
১৩০৫ সাল।