তোর হেন দশা কেন অয়ি পুষ্প-রাণি?
অনাদৃত, বিদলিত, চরণের তলে!
আর আর কুসুমেরা করে কাণাকাণি,
চেয়ে দেখে, হাসে, আর কত কথা বলে।
কোথা তোর অতুলন রূপের গৌরব?
কোথায় এখন তোর ফুটন্ত সে শোভা?
কে পলা’ল চুরি করে তোর সে সৌরভ?
ছিলি যে নিখিল-জন-চিত্ত-আঁখি-লোভা।
পূর্ণ গর্ব্বে ভরা যবে ছিলি ধরা-মাঝে,
আঁখি-কোণে অশ্রু যদি উথলিত কভু,
সে অশ্রুও ঝলসিত কি অপূর্ব্ব সাজে!
দেখি, দেখি, দেখি, সাধ না মিটিত তবু।
এখন্তো সদা অশ্রু-পূর্ণিত নয়ন,
দীর্ঘ শ্বাসে বুক বুঝি গেছে ভেঙে চুরে,
রচেছিস্ আপনার সমাধি-শয়ন
দীনভাবে আপনারি জন্ম-তরু-মূলে!
কেহ আর নাই কাছে আপনার জন,
বুকেতে আসিবে বল যার মুখ চেয়ে;
সে প্রীতি-সম্ভাষ, স্নেহ, সোহাগ, যতন,
কালের কঠোর স্রোতে চলে গেছে বেয়ে।
ঘুমা তুই একা, একা, ওরে ভাগ্যহীন!
সমভাবে কভু নাহি যায় চিরদিন।
১৩০৫। অগ্রহায়ণ।