আহা! প্রাণারাম কিবা
আনন্দ-মূরতিখানি,
মহেশের জীবন্ত প্ৰতিমা!
গভীর ভকতি ভরে
উচ্ছসিত হয়ে ওঠে
হৃদয়ের সীমা হ’তে সীমা।
কি পুণ্যবাসিত বায়ু
খেলিছে চৌদিকে হেথা!
কি মাধুরী প্রকৃতির বুকে
সংসার সহসা যেন
মিলাইয়া আসে চোখে,
স্বর্গরাজ্য হেরিয়া সম্মুখে!
এই তো এসেছি আমি
আমার সে কল্প-রাজ্যে,
জাগ্রত জীবন্ত অবস্থায়।
পুনঃ সে কলুষ-বিষে
জর্জ্জরিত সংসারেতে
ফিরে যেতে মন নাহি চায়।
হে দেব! করুণা তব
অসীম,- অসীম;- আমি
বর্ণনা কি করিব তাহার।
যার ভাগ্যে ঘটিয়াছে
বারেক দর্শন তব,
সেই জানে কি দয়া তোমার!
তোমার অসীম দয়া;
কিন্তু তুমি দেখ চেয়ে
আমারো কি অসীম বেদন।
শোন তুমি একবার
হৃদয়ের কর্ণে প্রভু,
আমার এ প্রাণের রোদন।
ঈশ্বরের প্রতিনিধি
তোমরাই এ জগতে,
তোমরাই ভরসা মোদের।
কোটি শান্তিহারা হিয়া
অহর্নিশি ঘোরে সদা
চতুর্দ্দিকে ওই শ্রীপদের।
তোমরা দেখাবে আলো
আমরা চলিব তবে
তোমাদেরি নির্দেশিত পথে।
একা যদি যেতে দাও,
স্বতই দুর্বল হিয়া
পড়ে র’বে মোহের গরতে।
জানি’ মোহ বিষময়,
জীবন জর্জ্জর বিষে,
‘শান্তি কোথা’, কাঁদে শুধু প্রাণ।
কাঁদে, তবু করে পান
সেই নিদারুণ বিষ,
-হায়, তারে কর পরিত্রাণ!
সংসার অসুখময়;
তুমি কি জান না তাহা?
তুমি তো করেছ ত্যাগ তায়।
কেমন করিয়া তবে
সেথা ফিরে যেতে পুনঃ
হায়, তুমি বলিছ আমায়?
এই শান্তিময় স্বর্গে
পাব না একটু স্থান,
আমি কি গো করিবারে বাস?
বহিতে হ’বে কি তবে
এ হৃদয়ে চির ক্ষত,
চির অশ্রু, চির দীর্ঘশ্বাস?
১৩০৫।