উত্তর প্রত্যুত্তর

(সঙ্গীত।)

নায়িকা। (সখীর প্রতি।)
দে লো! সজনি মনোহর বেশে সাজিয়ে;
এ অপরূপ রূপরাশি ওলো।;-
আন্ লো তুলিয়ে কানন খুঁজি’ খুঁজি’
সৌরভ-বাসিত ফুল ফুলদল।-
নিয়ে, আন লো হীরা মণি মুকুতা ভূষণ,
স্বর্ণ-খচিত নীল সুন্দর বসন,
-দে লো সজনি! সাজিয়ে।-
রাঙা, চরণ দুটী এ লোহিত রাগে,
হেরি, কার না মরিতে বাসনা জাগে?
যখন, যাইব চলিয়া ত্বরিত গমনে
মুখর নূপুর বাজিয়ে!
আধ, ঘোমটা খুলিয়া, মু’খানি তুলিয়া,
নয়নের কোণে চাহিয়ে।

(২)
নায়ক। (নায়িকার প্রতি।)
আহা মরি কত সুন্দর তুমি!
মোহিত চিত, নেহারি’।
চাহ ফিরে, চাহ ফিরে সখি অয়ি!
-আমি প্রেমভিখারী।
এসেছি ধরা দিতে প্রেমপাশে তব,
হৃদয় প্রাণ মন লহ গো লহ সব;
আপন প্রাণ দিয়া কিনিয়া লহ মোরে।
চির জীবন তরে হৃদয়-কারাগারে
রাখ,- সাধের বন্দী করি আমারে,
দুখানি, ললিত মধুর বাহুর ডোরে।-
বল গো মধুর স্বরে, শুনি,
“আমি তোমারি।”

(৩)
নায়িকা। (নায়কের প্রতি।)
এ যে খেলা শুধু, কিছু নহে আর।
তাহা, বুঝিলে না তুমি, কি দোষ আমার!
শুন তবে বলি পরকাশি,
আমি সখা! শুধু ভালবাসি
রূপের তরঙ্গরাশি তুলিয়া
হৃদয়, যাইতে চলি দলিয়া।
প্রেম নয়, প্রাণ নয়, এ অন্তর শূন্যময়,
শুধু, জেগে আছে রূপ, লয়ে অভিমান আপনার!

(৪)
নায়ক। (নায়িকার প্রতি।)
বড় কঠিন, হায়, কঠিন কি প্রাণ তোমার!
গরলে মাখা তামিয়াধার।
পরের আঁখি-জলে,
হৃদয় নাহি গলে,
অধরে আসে হাসি, গরবে ভাসে বুক!
বিজয়-বিভা হায়, ছার ও বিধুমুখ!
-বোলো না,- বোলো না, সখি! আর।

১৩০৪ সাল।