মন দিয়ে লেখাপড়া করে যেই জন
বড় হয়ে গাড়িঘোড়া চড়বে সে জন,
মুছে যাবে অভাব সব অনটন
হবে রাশি রাশি হাসি মাখা তোমার জীবন।
বাংলা না ইংরেজি? সে প্রশ্ন থাক থাক
সিলেবাস দেখে প্রাণ- “বাপ বাপ” ছাড়ে ডাক,
বিজ্ঞান দু’প্রকার আটখানা বই তার
ভূগোলটা গোলমেলে গোটা দুই বই তার।
ইতিহাসে জানা বলে বই তার থেকে বেশি
বইয়ের ভারেতে বুঝি ঢিলে হয়ে যাবে পেশী,
অঙ্কটা আতঙ্ক টিউটর নিয়ে নিক, নিয়ে নিক, নিয়ে নিক
সে যদি স্কুলেরই হয় তবে ফ্যান্টাস্টিক।
কতশত আঁকা আছে, আঁকিয়ে কে ডাকা আছে
কর্ম শিক্ষে আছে সেলাই ভিক্ষে আছে,
মাথা বন বন পিতা হেসে কন, মাতা হেসে কন
কী? কী? কী?
বাচ্চা হবেই শুনে চারিদিকে খোঁজ খোঁজ
কোথা ভালো স্কুল আছে আলোচনা রোজ রোজ,
কারা ক’টা ফর্ম দেবে, কারা ক’টা ছেলে নেবে
প্রপার এডুকেশন মোটামোটা ডোনেশান
ক্ষতি নেই যদি দাও ওভার ওভারডোজ।
রাত জেগে বাবাদের লাইন দিয়ে ফর্ম তোলা
ডোনোশান দিলে পরে পিছন দরজা খোলা,
ছেলে কি প্রতিভাবান? হক কথা শুনে যান
প্রতিভা-ট্রতিভা সব নাথিং বাট ফান,
রাম নাম মনে করে জপে যান বার বার
একটি ছোট্ট কথা ম্যানুপুলেশান।
এরপর পড়ে থাকে ভর্তির পরীক্ষা
ছেলে নয়, মা-বাবার অগ্নিপরীক্ষা,
চুকে জীবনের দাম্পত্যের সুখ
গ্রামদেশে বিয়ে করা বাবা আনে হাতে ধরা
মায়েদের জন্যে ইংরেজি ওয়ার্ডবুক,
তিনজনে শিক্ষিত হতে চায় রাতারাতি
শিক্ষাই সত্যি তলোয়ার প্রাণঘাতী,
বাচ্চার হয়ে গেলে মা-বাবার প্রতীক্ষা
কবে স্কুলটাকে নিতে তাঁদের পরীক্ষা।
সব কিছু ভালভাবে যদি শেষ হয়ে যায়
বাবা গর্বিত হয়ে মুখ দেখে আয়নায়,
বাচ্চাটা আয়নাতে দেখে শুধু আনমনে
হয়ত কোনো শপথ করে সে মনে মনে,
শিক্ষার আয়নায় সমাজকে চেনা যায়
সমাজ কি দেখে মুখ শিশুদের আয়নায়?
যে শিশু জন্ম নিল শিক্ষার বহু দূরে
শিক্ষা কি আলো দেয় তার কালো মুখ ভরে?
কে বলবে তার কানে সুর আর গানে গানে
আশার বাণী, প্রবাদ কথন, মধুর ভাষণ?
কী? কী? কী?
কন্ঠ ও সুর: নচিকেতা চক্রবর্তী