এরিক শিপটনের ব্যাধি

ফাতনার দিকে চোখ রেখে আমি বসে ছিলুম।
আর সেই ফাতনার উপরে বসে ছিল
লালে-হলুদে ডোরাকাটা, ছোট্ট একটা
ফড়িং।
ফড়িংটা হঠাৎ পাখনা কাঁপিয়ে উড়ে যেতেই
আমিও অমনি ছুট লাগালুম তার পিছনে।
ফাতনা ছেড়ে ফড়িং ধরলুম,
ফড়িং ছেড়ে
মস্ত একটা গাছ,
তারপর
গাছটার বুকের থেকে মাথার দিকে
উঠতে গিয়ে দেখি,
ওমা, নীলে-নীলে আকাশটা একেবারে
টইটম্বুর হয়ে আছে।

আমি এর নাম দিয়েছি ‘এরিক শিপটনের ব্যাধি’।
বিখ্যাত সেই মানুষটিকে আপনারা
বিলক্ষণ চেনেন। তিনি
পাহাড়ের চুড়োর দিকে উঠতে-উঠতে প্রায়ই,
যাত্রা পালটে, অন্য পথে
নীচে নামতেন। এক-রহস্যের দিকে
এগোতে-এগোতে
আর-এক রহস্যের আভাস মিলবামাত্র
ছুট লাগাতেন আর-এক পথে।

ব্যাধি নয় তো কী?
এরিক শিপটনের এই ব্যাধির থেকে এখন আমার
মুক্ত হওয়া চাই।
ফড়িংটা অভিমান করুক,
রাগে কাঁপতে থাকুক গাছের ডালপালা,
আকাশের বুকটা অপমানে জ্বলতে-জ্বলতে
খাক হয়ে যাক।
তবু আমি আর ওদের দিকে তাকাব না।
শুধু ওই
ফাতনার দিকে চোখ রেখে
চুপ করে
সারাটা দিন বসে থাকব।
দেখি, সেয়ানা সেই মাছটাকে আমি
জল থেকে
তুলে আনতে পারি কি না।

১০ বৈশাখ, ১৩৭৭