দুই চোখে জাগা

আমারো ভেঙেছে ঘুম বসন্তের প্রথম চিৎকারে
এখনাে আমার চোখ সম্পূর্ণ খােলে নি,
অর্ধেক নিদ্রার মধ্যে, অর্ধেক আলােয়, জাগরণে,
অর্ধেক নারীর যৌবনে, প্রেমে -অর্ধেক
বিকৃতবাসনা।

তুমি কোন সরল বিশ্বাসে আমার দুয়ারে এসে
নাড়া দিলে জীবনের বন্ধ-দরোজায়, হে বসন্ত?

আমি আর নেই সে মানুষ, আমি আর নেই সেই
গারো পাহাড়ের উদ্দাম বুনো হাওয়ায় প্রস্তুত
সরল তরুণ কোনো যুবা। তোমার চিৎকার শুনে
এতো সহজেই প্রভাবিত হবাে, তরল তরুণ রক্তে
ধুয়ে দেবো পথিবীর জমে ওঠা পাপ, অভিশাপ।

আমি ইতিহাসে মাথা রেখে এতদিন ঘুমিয়ে ছিলাম,
তুমি কোন সােনালি বিশ্বাসে
এখনাে দাঁড়িয়ে আছো আমার দুয়ারে?

আমার একটি চোখ এখনো নিদ্রার মধ্যে
স্বপ্নভূক কবি হয়ে আছে। নারীর যৌবনে,
ঘুমে, রক্তের বিকৃত বাসনায়- মদমােহমাংসর্যের
চতুর আঘাতে ক্লান্ত, তুমি তাকে কী ক’রে জাগাবে
হে বসন্ত, এ-চোখ আগের মতো সহজে জাগে না।

যে চোখ জাগ্রত ছিল উত্থিত সূর্যের মতো বিপ্লবের
বিদ্রোহী নীলিমায় সেই চোখ অবশেষে দেখেছে বিপ্লব,
আপন আত্মার পাশে দেখেছে মৃত্যুর অর্থ,
দেখেছে ধর্মের কালােমুখ,
ব্যর্থ স্বাধীনতা, দেখেছে স্বদেশ কাকে বলে।

তুমি কোন সরল বিশ্বাসে মধ্যরাতে নাড়া দাও
জীবনের বন্ধ-দরােজায়, হে বসন্ত,
আমি একচোখে কখনো জাগি না
আমি এক চোখে কিছুই দেখি না।