সাড়ে তিন হাত চিতা

নদীর দু’পাশে ছিলে, উঠে এলে বুকের ভিতরে।
আমি কাকে দোষ দেবো? নদী না চিতার অগ্নি?
কাকে? কার দোষ? এ দোষ নদীর নয়, এ দোষ চিতার নয়,
এ দোষ নারীর নয়- এ দোষ আমার।

কাঠের যা প্রাপ্য ছিল, নদীর যা প্রাপ্য ছিল, সেই প্রাপ্য
ছুঁয়েছে আমাকে। আমিই সে প্রজ্জ্বলন্ত চিতার ললাটে
চুমু খেয়ে একদিন বেদনাকে বলেছি বিলাস।
যেভাবে ডাহুক ডাকে সেইভাবে একদিন ডেকেছি নারীকে,
সেই-ই আমার দোষ, সেই-ই আমার প্রিয় দুর্বলতা।

আরও কাছে, বুকের ভিতরে, রক্তিম চৈতন্যে, শীতে,
মস্তিষ্কের রন্ধ্রে রন্ধ্রে,
স্নায়ুর তন্ত্রীতে এসো,
তোলো ঝড়,
বৃষ্টি হোক…

যেহেতু বৃষ্টি ছিল আমার কাংক্ষিত, আগুন আমাকে নিলো।
যেহেতু রমণী ছিল আমার অন্তিম, আমার যৌবন ছুঁয়ে
সব নারী হয়ে গেলো কাঠ, হয়ে গেলো চিতা।

আমি কাকে দোষ দেবো? আমি নিজে দাহ্য বস্তু হ’য়ে
কী ক’রে বলতে পারি এ দোষ কাঠের, এ দোষ চিতার?
এ দোষ কাঠের নয়, এ দোষ নদীর নয়- এ চিতা আমার প্রাপ্য।
এই চিতা আমাকে মানায়। সাড়ে তিন হাত প্রজ্বলন্ত কাঠ
আমার বুকের মধ্যে জ্বলছে, জ্বলুক, জ্বলে-পুড়ে ছাই হোক,
একদিন খুলবে কপাট।