সর্বগ্রাসী, হে নাগিনী

আমি চালের আড়তকে নারীর নগ্নতা বলে ভ্রম করি।
রাজবন্দীর হাতের শৃংখল আমার চোখের মধ্যে নারীর শাঁখার মতো
প্রেমের বন্ধন হয়ে কাঁপে, আমি ভ্রম করি।

যখন অগ্নির গ্রাসে এক- একটি সংসার পুড়ে ছারখার হয়ে যায়,
আমি সে-ভস্মস্তূপের মধ্যে ঝলসে যাওয়া শিশুর নিষ্পাপ মুখ
কিম্বা সংসারের বিপুল বিনাশ দেখে আজকাল আঁতকে উঠি না।
শুধুই নারীর মৃত্যু সারাক্ষণ জুড়ে থাকে আমার হৃদয়।

এ কেমন নারী-গ্রাস?
এ কোন বিকৃত-বোধ আজকাল পেয়েছে আমাকে?

জনৈকা নারীর গর্ভে প্রথাসিদ্ধ কিছুটা সময় আমিওতো
করেছি যাপন, আমিওতো আপন বোনের পাশে একদিন
শয়ন করেছি- ব’সে ব’সে দেখেছি ধুলায় শিশুর উদ্ধাহুনৃত্য
তারার শরীর ছুঁয়ে চোখে চোখে বেড়েছে বয়স।

তখন রমণী মানে আমুন্ডু মন্থনযোগ্যা সর্বগ্রাসী নাগিনী ছিল না,
তখন রমণী মানে রক্ত কাঁপানো সুখে বুকে মুখে চুমু-খাওয়া
অফুরন্ত বাসনা ছিল না, তখন রমণী মানে অন্যকিছু ছিল।

এ কেমন নারী-গ্রাস?
এ কোন বিকৃত বোধ আজকাল পেয়েছে আমাকে?
আমি চালের আড়তকে নারীর নগ্নতা বলে ভ্রম করি।
নারীর মৃত্যু ছাড়া কোনো মৃত্যু স্পর্শ করে না,
মাতা নয়, শিশু নয়, গণহত্যা নয়, কেবলই নারীর মৃত্যু
সারাক্ষণ জুড়ে থাকে আমার হৃদয়।