কথোপকথন ৩

শুভঙ্কর
আমাদের দিন শেষ, নন্দিনী নিথর হয়ে থাকো
তোমার গানের কলি বাতাসের কানে পৌছবে না।
জগঝম্প, জগঝম্প, জগঝম্প বাজাতে পারো কি?
সমস্ত বকুলতলা মাইকেল জ্যাকসনের কেনা।

তুমি কি শব্দের কাছে আজো খোঁজো জলতরঙ্গের
সেই সব মৃদু স্বর যা আকাশে এঁকে দেয় নীল?
আমি তো দৃশ্যের কাছে খুঁজি না সে স্বয়ংবরসভা
সমাগত যেইখানে সৌন্দর্যেরসেমৃদ্ধ নিখিল।

নন্দিনী, যা বলতে চাও বলে নাও এই শেষবার,
এরপর ভালোবাসা সেও যন্ত্র, সেও কমপিউটার।

নন্দিনী
জামদানী পরে আসিনি তোমার কাছে
পরেছি সস্তা দামের টাঙ্গাইল।
তুমি কি ভেবেছ জানি না বুঝি না বাতাসের গতিবিধি
মাছ কেড়ে খায় কোনখানে কোন চিল?

তুমি বা আমি তো ইতিহাস গড়িনিকো
জন্মে আমরা পেয়ে যাই তার ছাঁচ।
সেই ছাঁচও ভাঙি যখন দেখি যে অ্যাকোয়ারিয়াম চায়
মানুষেরা হোক পুষে রাখবার মাছ।

জানি যান্ত্রিক প্রবণতা খুবই গাঢ়
ঐতিহ্যের শিকড়ে পড়েছে টান।
কিন্তু অবক্ষয় কি অশ্বমেধের বিজয়ী ঘোড়া?
কোন একদিন তারও আছে অবসান।

শুভঙ্কর
ফুল চন্দন পড়ুক তোমার মুখে
আজকের ক্ষয় আগামীকালকে গড়ুক।
জাহাজডুবির মতন ঘটনাস্রোতে
মৃত্যুর দিন দুর্ঘটনায় মরুক।

আমরা চাইব দু-দশ বছর নয়,
আমার সবুজে তোমার লালের ঝাঁপ
সাত শতাব্দী থাকুক অব্যাহত
সাত-সাগরের জল হোক পরিমাপ।

নন্দিনী
শুনুন মাশাই, আর কথা নয়,
বাড়ি।
আমাদের কথা দূরপাল্লার
গাড়ি।
সমুদ্রে-ফেনা, তট মুছে দিয়ে
ছোটে।

শুভঙ্কর
কথা থেমে যাবে, আলতা পরাও
ঠোঁটে।