কথোপকথন ১৩

– তোমার মধ্যে অনন্তকাল বসবাসের ইচ্ছে
তোমার মধ্যেই জমিজমা ঘরবাড়ি, আপাতত একতলা
হাসছ কেন? বল হাসছ কেন?
– একতলা আমার একবিন্দু পছন্দ নয়।
সকাল-সন্ধে চাঁদের সাথে গপ্পোগুজব হবে
তেমন উঁচু নাহলে আবার বাড়ি নাকি?
– আচ্ছা তাই হবে।
চাঁদের গা-ছুঁয়ে বাড়ি,
রহস্য উপন্যাসের মতো ঘোরানো-প্যাঁচানো সিঁড়ি
বাঁকে বাঁকে সোনালি ফ্রেমে সাজানো স্বপ্নদৃশ্য
শিং-সমেত মায়া-হরিণের মুণ্ডু
হাসছ কেন? বল হাসছ কেন?
– কাটা-হরিণ দেয়ালে ঝুলবে, অসহ্য।
হরিণ থাকবে বনে, বন থাকবে আমাদের
খাট-পালঙ্কের চারধারে
খাট-পালঙ্কের নিচে ছোট্ট একটি পাহাড়
পাহাড়ের পেট চিরে ঝর্না।
– আচ্ছা তাই হবে।
পাহাড় চিরে ঝর্না, ঝর্নার উপরে কাশ্মিরী কার্পেট
সিলিং এ রাজস্থানী-ঝাড় জলের ঝাঁঝরির মতো উপুর করা
জানালার গায়ে মেঘ, মেঘের গায়ে ফুরফুরে আদ্দির
পাঞ্জাবি
পাঞ্জাবির গায়ে লক্ষ্ণৌ-ই চিকনের কাজ
হাসছ কেন? বল হাসছ কেন?
– মেঘ রোজ রোজ পাঞ্জাবি পরবে কেন?
এক একদিন পরবে বালুচরি শাড়ি কিংবা
খাটাও এর পাতলা প্রিন্ট
মাথায় বাগান-খোঁপা, খোঁপায় হীরের প্রজাপতি
– আচ্ছা তাই হবে।
মেঘ সাজবে জরি-পাড় শাড়িতে
আর তখুনি নহবতখানার সানাই এ জয়জয়ন্তী
আর তখুনি অরণ্যের রন্ধ্রে-রন্ধ্রে বুনো জানোয়ারের হাঁক-ডাক
খাদে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য জেগে উঠবে জলপ্রপাত
শিকারের জন্য তীর ধনুক, দামামা দুন্দুভি
হাসছ কেন? বল হাসছ কেন?
– তুমি এমন ভাবে বলছ
যেন ভালবাসা মানে সাপে নেউলে ভয়াবহ
একটা যুদ্ধ।
ভয় লাগছে।
অন্য গল্প বল।