কথোপকথন ৪

– যে কোন একটা ফুলের নাম বল
– দুঃখ।
– যে কোন একটা নদীর নাম বল।
– বেদনা।
– যে কোন একটা গাছের নাম বল
– দীর্ঘশ্বাস।
– যে কোন একটা নক্ষত্রের নাম বল
– অশ্রু।
– এবার আমি তোমার ভবিষ্যত বলে দিতে পারি
– বল।
– খুব সুখী হবে জীবনে।
শ্বেতপাথরে পা।
সোনার পালঙ্কে গা।
এগোতে সাতমহল
পিছোতে সাতমহল।
ঝর্ণার জলে স্নান
ফোয়ারার জলে কুলকুচি।
তুমি বলবে, সাজব।
বাগানে মালিণীরা গাঁথবে মালা
ঘরে দাসিরা বাটবে চন্দন।
তুমি বলবে, ঘুমব।
অমনি গাছে গাছে পাখোয়াজ তানপুরা,
অমনি জোৎস্নার ভিতরে এক লক্ষ নর্তকী।
সুখের নাগরদোলায় এইভাবে অনেকদিন।
তারপর
বুকের ডান পাঁজরে গর্ত খুঁড়ে খুঁড়ে
রক্তের রাঙা মাটির পথে সুড়ঙ্গ কেটে কেটে
একটা সাপ
গায়ে বালুচরীর নকশা
নদীর বুকে ঝুঁকে-পড়া লাল গোধূলি তার চোখ
বিয়েবাড়ির ব্যাকুল নহবত তার হাসি,
দাঁতে মুক্তার দানার মত বিষ,
পাকে পাকে জড়িয়ে ধরবে তোমাকে
যেন বটের শিকড়
মাটিকে ভেদ করে যার আলিঙ্গন।
ধীরে ধীরে তোমার সমস্ত হাসির রঙ হলুদ
ধীরে ধীরে তোমার সমস্ত গয়নায় শ্যাওলা
ধীরে ধীরে তোমার মখমল বিছানা
ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টিতে, ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টিতে সাদা।
– সেই সাপটা বুঝি তুমি?
– না।
– তবে?
– স্মৃতি।
বাসর ঘরে ঢুকার সময় যাকে ফেলে এসেছিলে
পোড়া ধূপের পাশে।