কথোপকথন ২২

কখনো ভাবিনি আগে স্বপ্ন পরতে পারে এ রকম
ঘাতকের বেশ।
নিজেরই দুর্ভাগ্যক্রমে ধূপকাঠি পুড়ে পুড়ে
ভস্মে হল শেষ।
আকাশে কোথাও নেই মেঘকণা বজ্রের বিদ্রুপ
তবু বৃষ্টিপাতে
ভিজে যাওয়া অবিশ্বাস্য। সে অঘটনই ঘটে গেল
কালকের রাতে।

ভয়ঙ্কর কালো ডানা বাতাসের চেয়ে আরাে চুপ
দাঁড়াল শিয়রে।
হাত নেই তবু তার ত্রিশূলের দীর্ঘতর ছায়া,
রক্তাক্ত শিহরে।
সে যে কী আদিম ভয়ে সর্বাঙ্গের রোমকূপে-কূপে
সজারুর কাঁটা।
তোমার পিছনে আমি, তুমি আগুনের মাঝখানে
অগ্নিগ্রাসে হাঁটা।

ঈষৎ অস্পষ্ট দূরে যাগযজ্ঞ, হোম, বলিদান
ঢাকের উল্লাস।
কপালকুণ্ডলা আমি, খুঁজে মরি সমুদ্র সৈকতে
যেন কার লাস।
তখনই সে ত্রিশূলের নিরক্ত ধাতব কণ্ঠস্বর
বেঁধায় অঙ্কুঁশ-
যে তার অন্বিষ্ঠ সে তো কুয়াশায় গড় কুশীলব
সে তো অর্ফিয়ুস।
তোমাকে পাব না আমি, এই ভয়, এই ভূকম্পন
গুরু গুরু গুরু
সেদিনের শ্বাসরুদ্ধ দুঃস্বপ্নের ঘুম ভেঙে গেলে
তারপরই শুরু।

শুভঙ্কর! চিঠি দাও, কথা বলো, আরো গান গাও
আরো কাছে থাকো।
আমার প্রহরগুলো আমাকে ঘিরেছে ঊর্ণাজালে,
নাম ধরে ডাকো।

(নন্দিনীর চিঠি শুভঙ্করকে ৬)