কথোপকথন ৯

তুমি আছো, তাই এই কলকাতায় রয়েছি এখনো
নইলে কবে উপড়ে ভেঙে কলকাতাকে বানিয়ে দিতাম
আরেক মহেনজোদারো।
শুধু ঢেউ, শুধু ঢেউ,

সে সব ঢেউ এর নিচে স্থায়ী স্রোতে, জলকল্লোলের
একাগ্র, একতাময় সেই কোন সমুদ্রগামীতা
কেবলি দ্বীপের সংখ্যা বাড়ে
দ্বীপে দ্বীপে বিচ্ছিন্নতা বাড়ে।

যতখানি ঘাড় তুললে সপ্তর্ষি মণ্ডল বোঝা যায়
ঘাড়ের সে জোড়ে পক্ষাঘাত
উত্থানে উদ্যমহীন, যেন তাকে ডাক্তার বলেছে
রক্তে ভাঁটা, বেডরেস্টে থাকো।

এত বড় এ শহরে এমন উঠোন দেখেছ কি
রোদ্দুরে বিছানো যায় পাকা ধান, প্রত্যেকের মাঠের ফসল?
অথবা এমন কোন স্থাপত্য বা ভাস্কর্যের ব্যাপ্ত অভ্যুদয়
যার শক্তি বিচ্ছুরণে মানুষ প্রেরণাপূর্ণ হবে?
খুব দূরে যেতে চেয়ে খুব কাছ থেকে ফিরে আসি।
নক্ষত্রের চিহ্ন দেখে জাহাজের গতিমুখ বাঁকাতে পারি না
এমন দ্বীপের দিকে, যা হবে একান্তভাবে আমাদেরই আদি-আবিষ্কার।

তোমাকে আমার পাশে দেখামাত্র সাতলক্ষ ভিড়
আমাদের স্বপ্নশয্যা রচনার খসড়া তৈরির
গন্ধ শুঁকে সাতলক্ষ মশা মাছি আরশোলার ভিড়।
সাতলক্ষ চুম্বনের মৃত্যু হয়ে গেছে ঐ ভিড়ে।
সাতলক্ষ আলিঙ্গনে ঝরে গেছে ফোটার আগেই।
নন্দিনী!
এ ছাড়া তুমি জন্মানোর অন্য কোন শহর পেলে না?