কথোপকথন ১৬

তোর সঙ্গে কিছু গোপন কথাবার্তা ছিল অমিতাভ,
মন-মেজাজ ডাইনির মাথার জট,
নদীর অর্ধেকটাকে কামড়ে খেয়েছে চর,
হায়রে চরটা যখন বিষন্ন চিতাবাঘের মতো,
নিজের প্রতিকৃতি দেখতে পাই আমি,
যখন যা বলি মাঝখানে ফোঁটা ফোঁটা,
যখন যা ভাবি মাঝখানে ফোঁটা ফোঁটা,
যখন যা আদরে গড়ি মাঝখানে ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি,
আর আঙুলের ফাঁক দিয়ে খুচরো পয়সার মতো
গলে যায় কৃতজ্ঞতাহীন স্বপ্নেরা,
যেন জামার কাপড়টা ঢুকে গেছে সেলাই কলে,
চাকা ঘুরছে, সুতরাং ফেরার রাস্তায় খিল,
আর এগোনো মানেই ক্রমাগত এফোঁড়-ওফোঁড়,
কাঁটা-ছেঁড়া যা হবার সে সব তো আগেই,
সাইজমাফিক, ছাতি ৩৮, ঝুল ৪২, মহুরি ১৪,
কিছু হওয়ার ইচ্ছে মানেই আগে দীর্ণ-বিদীর্ণ, নিঃশব্দ চুরমার,
রান্নার আগে যেমন চালকুমড়োর ফালি,
পরে হওয়া না-হওয়া, যে যত বড় তার
রক্তনাড়িতে তত লম্বা সেলাইয়ের দাগ,
কিন্তু আমি কি শুধু নিজের জন্যেই দুঃখিত,
চিরে চিরে নারকেল পাতার মতো ব্যর্থ-বহুল,
যেতে যেতে উল্টে পড়ে যেসব মিনিবাস
এবং মানুষ, সে-সব মানুষের পিছনের পা দুটোই নিজের,
সামনের দুটো পায়ে পরস্মৈপদী ঘুঙুর,
আকাশের এত বড় আয়না থাকতে যারা
নিজের মুখ দেখে জুতোর পালিশে,
সেই সব এবং আরও অনেক ১৮ তলা বাড়ির
ভাঙচুর নিয়েও তোর সঙ্গে অনেক
গোপন কথাবার্তা ছিল অমিতাভ।