কথোপকথন ১৯

পরশু তুই যখন আমার স্টাডিতে, আমি রবীন্দ্রসদনে,
কণিকার গান,
অনেকদিন পরে ধূপ-দীপের মতো একটা সন্ধে।
গানের প্রদর্শনী, সুরে-আঁকা ছবি, ছবির গায়ে
মেঘের আসা-যাওয়া।
কিন্তু জিজ্ঞেস কর, কী কী গান? জানি না।
গান কই? আমি তো শুনেছি বাঁশি।
অন্তরীক্ষ থেকে নেমে নিয়ে যায় আর এক অন্তরীক্ষে
যে শূন্যতা নিয়ে এসেছিল, পেয়ে গেল বিভাসের রাজমুকুট
যে বেদনায় ছিল, সে পূরবীর সোনার সিংহাসন।
যেখানে পারাপার অগম, সেখানে
নদীকেই নৌকা বানিয়ে দিল সে।
কিন্তু এসব তো মনে হয়েছে পরে।

শোনার সময় আমি মৃত।
আমাকে তার বাঁশি বানাবে বলে, গানের করাত
চিরে চিরে, ছিঁড়ে ছিঁড়ে, তখন কিছুই আর গোপন নয়
আমি নিঃস্ব, নগ্ন সর্বস্বহীনতায় রাজাধিরাজ।
সবচেয়ে মজার কথাটা এই
গান যখন তার রঙিন চাঁদোয়ায় মুড়ে ফেলে আমাদের
কিছুই অসম্ভব মনে হয় না আর।
শ্যাগালের ছবির মতো উড়ে যেতে পারি আমরা,
জানলার ফাঁক দিয়ে রোহিনী নক্ষত্রের নীল উদ্যানেই
হয়তো আমাদের সবচেয়ে প্রিয় বিছানা,
হয়তো বা সূর্যের ভিতরে যে একুশতলা আলোর হাসপাতাল
সেইখানেই সমস্ত কান্নার আরোগ্য।
গানের সময় আমাদের পিঠে দেবদূতের ডানা।