কথোপকথন ২৩

বাল্মীকি-প্রতিভার শতবর্ষ, গত রবিবার সন্ধেয় সল্ট লেকে তাই
নিয়ে অনুষ্ঠান ছিল কাকলিদের, তোকে দেখলাম না, খোঁজাখুঁজি হল অনেক।
বেশ করেছিল স্টেজটা, কালো পর্দার পটভূমিকায় শুধু একটা জ্বলন্ত
হাঁড়িকাঠ, অন্ধকারেরই একটা রক্ত-লাগা দাঁত যেন, আর সেইই শুধু
স্থির, মঞ্চের সব কিছুই যখন আবৰ্তময়, যে-যার নিজের সমস্যায়
শঙ্কিত বলেই চঞ্চল, রিমঝিম বরষার মতো আসা-যাওয়া, উচ্চকিত
কোরাস, নিরাপত্তাহীন বালিকার নিভৃত রোদন, খরে উপরে রোদ,
ব্যাধের হাসির উপরে রোদ, এমনকি দস্যুদলের রক্ত-পিপাসার উপরে
রোদ, রোদ মানে মঞ্চের আড়াল থেকে ছোঁড়া আলো।
হাঁড়িকাঠটাই শুধু অন্ধকারে, অথচ নিজের অহংকারে ষাঁড়ের
কুঁদের মতো দৃপ্ত, যেন জানে কী ঘটবে চারিদিকের রক্ত-চিৎকারের অন্তিমক্ষণে,
কে ফিরিয়ে নেবে চোখ ঘৃণায়, কে তার সর্বাঙ্গের শুকনো রক্তরেখার
আঁশটে গন্ধের পাণ্ডুলিপিটাকে ছুঁড়ে দেব আত্মধিক্কারের এক-গলা
জলে, আত্ম-আবিষ্কারের গুরু গুরু স্পন্দনে কে জেগে উঠবে হঠাৎ-পাওয়া
মন্ত্রধ্বনিতে, মৃত্যুর বিরুদ্ধে মানবিক শাখা-প্রশাখায়।
সম্ভবত এইভাবেই সে অর্থাৎ ঐ রক্ত-ক্ষত হাঁড়িকাঠটা, বুঝে নিয়েছিল
নিজের ভূমিকা, আর সেই কারণেই সমস্ত ভ্রান্তি এবং জাগরণের কেন্দ্রে মৃত্যুদণ্ডে
দণ্ডিত অপরাধীর মতো অবনত ছিল সে, যেন ইতিহাস-জানা কোন স্ব-বিরোধী সত্তা।