রাত গাঢ় হলেই

রাত গাঢ় হলেই আমি নিজেকে ছিঁড়ে নিতে পারি
পৃথিবীর রক্তাক্ত নাড়ির খামচা থেকে।
রাত গাঢ় হলেই বুঝতে পারি সমস্ত শব্দের ঠিক ঠিক মানে,
সমস্ত ঘটনার ছাল ছাড়িয়ে পৌঁছতে পারি তার হৃৎপিণ্ডে।

যত রকম জিজ্ঞাসা আছে তার সব কিছুকে জুড়লে একটা মানুষ।
মানুষের জিজ্ঞাসা মানুষকে টেনে নিয়ে যায়।
মাটির থেকে উপরে, খানাখন্দ সাঁকো সুড়ঙ্গের উপরে
ফিনফিনে শান্তি, এমনকি ধপধপে কাচা নিরাপত্তার উপরে
এমন সৌরলোকে, যেখানে আলোর বর্শা থাক থাক করে সাজানো।

রাত গাঢ় হলেই নক্ষত্রগুলো উজ্জল হয়ে ওঠে
তপঃক্লিষ্ট ঋষিদের মতো,
এবং তাঁরা নেমে আসেন পৃথিবীর খরখরে অন্ধকারের অলিতে গলিতে।
আর সেই সুযোগে আমার দেখা হয়ে যায়।
প্রত্যেকটি স্তম্ভের ভিতরকার ফাটল
প্রত্যেকটি হিতৈষী পুরুষের ছোরার মতো চোরা হাসি
প্রত্যেকটি ঘড়ির কাঁটায় বিস্ফোরণের গোপন নির্দেশ।

রাত গাঢ় হলেই নিজের পৃথিবীকে কাছে পাই আমি।
হাজার মাইল ফলন্ত শস্যের ক্ষেত হয়ে যায় আমার ভাবনাগুলো।
আর উন্মাদ পুরুষ যেভাবে নারীকে ভালোবাসে নিংড়ে নিংড়ে
সেই ভাবে সময়ের সঙ্গে আমার
তুমুল ভালোবাসাবাসির সংঘর্ষ।