১৪০০ শাল

আজি হতে শত বর্ষ পরে
কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি
কৌতুহল ভরে
আজি হতে শতবর্ষ পরে।
আজি নব বসন্তের প্রভাতের আনন্দের
লেশমাত্র ভাগ-
আজিকার কোনো ফুল, বিহঙ্গের কোনো গান,
আজিকার কোনো রক্তরাগ-
অনুরাগে সিক্ত করি পারিব না পাঠাইতে
তোমাদের করে
আজি হতে শতবর্ষ পরে!

তবু তুমি একবার খুলিয়া দক্ষিণ দ্বার
বসি বাতায়নে
সুদূর দিগন্তে চাহি কল্পনায় অবগাহি
ভেবে দেখো মনে-
এক দিন শতবর্ষ আগে
চঞ্চল পুলক রাশি কোন্ স্বর্গ হতে ভাসি
নিখিলের মর্ম্মে আসি লাগে,-
নবীন ফাল্গুন দিন সকল বন্ধন হীন
উন্মত্ত অধীর-
উড়ায়ে চঞ্চল পাখা পুষ্পরেণুগন্ধমাখা
দক্ষিণ সমীর,-
সহসা আসিয়া ত্বরা রাঙায়ে দিয়েছে ধরা
যৌবনের রাগে
তোমাদের শতবর্ষ আগে!
সে দিন উতলা প্রাণে, হৃদয় মগন গানে
কবি এক জাগে,-
কত কথা, পুষ্প প্রায় বিকশি তুলিতে চায়
কত অনুরাগে
একদিন শতবর্ষ আগে!

আজি হতে শত বর্ষ পরে
এখন্ করিছে গান সে কোন্ নূতন কবি
তোমাদের ঘরে?
আজিকার বসন্তের আনন্দ অভিবাদন
পাঠায়ে দিলাম তাঁর করে!
আমার বসন্তগান তোমার বসন্ত দিনে
ধ্বনিত হউক্ ক্ষণতরে
হৃদয় স্পন্দনে তব, ভ্রমর গুঞ্জনে নব,
পল্লব মর্ম্মরে
আজি হতে শত বর্ষ পরে।

২ ফাল্গুন,
১৩০২।