আশীর্ব্বাদ

জ্বলিল অরুণরশ্মি আজি ওই তরুণ প্রভাতে
হে নবীনা, নব রাগ-রক্তিম শোভাতে।
সীমন্তে সিন্দূর বিন্দু তব
জ্যোতি আজি পেলো অভিনব,
চেলাঞ্চলে উদ্ভাসিল অন্তরের দীপ্যমান প্রভা,
সরমের বৃন্তে তুমি আনন্দের বিকশিত জবা।।

সাহানা রাগিণীরসে জড়িত আজি এ পুণ্যতিথি,
তোমার ভুবনে আসে পরম অতিথি।
আনো আনো মাঙ্গল্যের ভার,
দাও বধূ, খুলে দাও দ্বার,
তোমার অঙ্গনে হের সগৌরবে ওই রথ আসে,
সেই বার্ত্তা আজি বুঝি উদ্ঘোষিল আকাশে বাতাসে।।

নবীন জীবনে তব নব বিশ্ব-রচনার ভাষা
আজি বুঝি পূর্ণ হ’লো ল’য়ে নব আশা।
সৃষ্টির সে আনন্দ উৎসবে
তব শ্রেষ্ঠধন দিতে হবে,
সেই সৃষ্টি সাধনায় আপনি করিবে আবিষ্কার
তোমার আপনা মাঝে লুকানো যে ঐশ্বর্য-ভাণ্ডার।।

পথ কে দেখালো এই পথিকেরে তাহা আমি জানি,
ওই চক্ষুতারা তা’রে দ্বারে দিল আনি’।
যে-সুর নিভৃতে ছিল প্রাণে
কেমনে তা শুনেছিলো কানে,
তোমার হৃদয়কুঞ্জে যে-ফুল ছায়ায় ছিল ফুটে’,
তাহার অমৃতগন্ধ গিয়েছিলো বন্ধ তা’র টুটে।।

যদি পারিতাম আজি অলকার দ্বারীরে ভুলায়ে
হরিয়া অমূল্য মণি অলকেতে দিতাম দুলায়ে।
তবু মোর মন মোরে কহে
সে-দান তোমার যোগ্য নহে,
তোমার কমলবনে দিব আনি’ রবির প্রসাদ,
তোমার মিলনক্ষণে সঁপিব কবির আশীর্ব্বাদ।।

আশ্বিন (?), ১৩৩৫