বিরহ

শঙ্কিত আলোক নিয়ে দিগন্তে উদিল শীর্ণ শশী,
অরণ্যে শিরীষশাখে অকস্মাৎ উঠিল উচ্ছ্বসি’
বসন্তের হাওয়ার খেয়াল,
ব্যথায় নিবিড় হ’লো শেষবাক্য বলিবার কাল।

গোধূলির গীতিশূন্য স্তম্ভিত প্রহরখানি বেয়ে
শান্ত হ’লো শেষ দেখা,- নির্নিমেষ রহিলাম চেয়ে।
ধীরে ধীরে বনান্তে মিলালো
প্রান্তরের প্রান্ততটে অস্তশেষ ক্ষীণ পাংশু আলো।।

যে-দ্বার খুলিয়া গেলে রুদ্ধ সে হবে না কোনোমতে
কান পাতি র’বে তব ফিরিবার প্রত্যাশার পথে,
তোমার অমূর্ত্ত আসা-যাওয়া
যে-পথে চঞ্চল করে দিগ্বালার অঞ্চলের হাওয়া।।

বসন্তে মাঘের অন্তে আম্রবনে মুকুল-মত্ততা
মধুর গুঞ্জনে মিশি’ আনে কোন্ কানে কানে কথা।
মোর নাম তব কণ্ঠে ডাকা
শান্ত আজি তাপক্লান্ত দিনান্তের মৌন দিয়ে ঢাকা।।

সঙ্গহীন স্তব্ধতার সুগম্ভীর নিবিড় নিভৃতে
বাক্যহারা চিত্তে মোর এতদিনে পাইনু শুনিতে,
তুমি কবে মর্ম্মমাঝে পশি’
আপন মহিমা হ’তে রেখে গেলে বাণী মহীয়সী।।

২৬ আষাঢ়, ১৩৩৫