বধূ

শ্রীমতী অমিতা সেনের পরিণয় উপলক্ষে

মানুষের ইতিহাসে ফেনোচ্ছল উদ্বেল উদ্যম
গর্জি উঠে;
অতীত তিমিরগর্ভ হতে তুরঙ্গম
তরঙ্গ ছুটিছে শূন্যে;
উন্মেষিছে মহাভবিষ্যৎ।
বর্তমান কালতটে অগ্নিগর্ভ অপূর্ব পর্বত
সদ্যোজাত মহিমায় উড়ায় উজ্জ্বল উত্তরীয়
নব সূর্যোদয়-পানে।
যে-অদৃষ্ট, যে-অভাবনীয়
মানুষের ভাগ্যলিপি লিখিতেছে অজ্ঞাত অক্ষরে
দৃপ্ত বীরমূর্তি ধরি, দেখিয়াছি;
তার কণ্ঠস্বরে
শুনেছি দীপকরাগে সৃষ্টিবাণী মরণবিজয়ী
প্রাণমন্ত্রে।
এই ক্ষুব্ধ যুগান্তর-মাঝে বৎসে অয়ি,
তোমারে হেরিনু বধূবেশে,
নির্ঝরিণী নৃত্যশীলা,
সহসা মিলিছ সরোবরে,
চটুল চঞ্চল লীলা
গভীরে করিছ মগ্ন;
নির্ভয়ে নিখিল করি পণ
নবজীবনের সৃষ্টি-রহস্য করিছ উন্মোচন।
ইতিহাসবিধাতার ইন্দ্রজাল বিশ্বদুঃখসুখে
দেশে দেশে যে-বিস্ময় বিস্তারিছে বিরাট কৌতুকে
যুগে যুগে,
নরনারী হৃদয়ের আকাশে আকাশে
এও সেই সৃষ্টিলীলা জ্যোতির্ময় বিশ্ব-ইতিহাসে।

শান্তিনিকেতন
৩ আষাঢ়, ১৩৩৯