বন্দী

‘বন্দী, তোরে কে বেঁধেছে
এত কঠিন ক’রে?

প্রভু আমায় বেঁধেছে যে
বজ্রকঠিন ডোরে।
মনে ছিল সবার চেয়ে
আমিই হব বড়ো,
রাজার কড়ি করেছিলেম
নিজের ঘরে জড়ো।
ঘুম লাগিতে শুয়েছিলেম
প্রভুর শয্যা পেতে,
জেগে দেখি বাঁধা আছি
আপন ভাণ্ডারেতে।

‘বন্দী ওগো, কে গড়েছে
বজ্রবাঁধনখানি?

আপনি আমি গড়েছিলেম
বহু যতন মানি।
ভেবেছিলেম আমার প্রতাপ
করবে জগৎ গ্রাস,
আমি রব একলা স্বাধীন,
সবাই হবে দাস।
তাই গড়েছি রজনী দিন
লোহার শিকলখানা-
কত আগুন কত আঘাত
নাইকো তার ঠিকানা।
গড়া যখন শেষ হয়েছে
কঠিন সুকঠোর,
দেখি আমায় বন্দী করে
আমারি এই ডোর।

বোলপুর
৯ বৈশাখ ১৩১৩