বর্ষাসন্ধ্যা

আমায় অমনি খুশি করে রাখো
কিছুই না দিয়ে-
শুধু তোমার বাহুর ডোরে
বাহু বাঁধিয়ে।
এমনি ধূসর মাঠের পারে
এমনি সাঁঝের অন্ধকারে
বাজাও আমার প্রাণের তারে
গভীর ঘা দিয়ে।
আমায় অমনি রাখো বন্দী ক’রে
কিছুই না দিয়ে।

আমি আপ্‌নাকে আজ বিছিয়ে দেব
কিছুই না করি-
দু হাত মেলে দিয়ে, তোমার
চরণ পাকড়ি।
আষাঢ়-রাতের সভায় তব
কোনো কথাই নাহি কব,
বুক দিয়ে সব চেপে লব
নিখিল আঁকড়ি।
আমি রাতের সাথে মিশিয়ে রব
কিছুই না করি।

আজ বাদল-হাওয়ায় কোথা রে জুঁই
গন্ধে মেতেছে!
লুপ্ত তারার মালা কে আজ
লুকিয়ে গেঁথেছে!
আজি নীরব অভিসারে
কে চলেছে আকাশ-পারে,
কে আজি এই অন্ধকারে
শয়ন পেতেছে!
আজ বাদল-হাওয়ায় জুঁই আপনার
গন্ধে মেতেছে।

ওগো, আজকে আমি সুখে রব
কিছুই না নিয়ে
আপন হতে আপন-মনে
সুধা ছানিয়ে।
বনে হতে বনান্তরে
ঘনধারায় বৃষ্টি ঝরে
নিদ্রাবিহীন নয়ন-‘পরে
স্বপন বানিয়ে।
ওগো, আজকে পরান ভরে লব
কিছুই না নিয়ে।

রাত্রি
৯ আষাঢ় [১৩১৩]