দিনান্তে

বাহিরে তুমি নিলে না মোরে, দিবস গেল ব’য়ে,
তাহাতে মোর যা-হয় হোক্ ক্ষতি
অন্তরে যা দিবার ছিল মিলিছে এক হ’য়ে,
চরণে তব গোপনে তা’র গতি।
লুকায়ে ছিল ছায়াতে ফুল, ভরিল তব ডালি,
গন্ধভরা বন্দনাতে দিয়েছি ধূপ জ্বালি’,
প্রদীপ ছিল মলিন-শিখা, ধোঁয়াতে ছিল কালী,
দীপ্ত হ’য়ে উঠিছে তা’র জ্যোতি।
বাহির হ’তে না যদি লও পূজার এই ডালি
চরণে তব গোপনে তা’র গতি।।

না-হয় তুমি ওপারে থাকো, এপারে আমি থাকি,
নীরব এই নীরস মরুতীরে
অন্ধকারে সন্ধ্যাতারা নয়নে দেয় আঁকি’
সুদূর তব উদার আঁখিটিরে।
ব্যথায় মম তোমারি ছায়া পড়িছে মোর প্রাণে,
বিরহ হানি’ তোমারি বাণী মিলিছে মোর গানে,
অলখ্ স্রোতে ভাবনা ধায় তোমার তটপানে
এপার হ’তে বহিয়া মোর নতি
যে-বীণা তব মন্দিরেতে বাজেনি তানে তানে
চরণে তব নীরবে তা’র গতি।।

১ শ্রাবণ, ১৩৩৪