এবার যে ঐ এল সৰ্ব্বনেশে গো

এবার যে ওই এল সর্বনেশে গো!
বেদনায় যে বান ডেকেছে
রোদনে যায় ভেসে গো।
রক্ত-মেঘে ঝিলিক মারে,
বজ্র বাজে গহন-পারে,
কোন্ পাগোল ওই বারে বারে
উঠছে অট্টহেসে গো!
এবার যে ওই এল সর্বনেশে গো।

জীবন এবার মাত্ল মরণ-বিহারে!
এইবেলা নে বরণ ক’রে
সব দিয়ে তোর ইহারে!
চাহিস নে আর আগু-পিছু,
রাখিস্নে তুই লুকিয়ে কিছু,
চরণে কর্ মাথা নিচু
সিক্ত আকুল কেশে গো!
এবার যে ওই এল সর্ব্বনেশে গো।

পথটাকে আজ আপন ক’রে নিয়ো রে!
গৃহ আঁধার হ’ল, প্রদীপ
নিব্ল শয়ন-শিয়রে।
ঝড় এসে তোর ঘর ভরেচে,
এবার যে তোর ভিত নড়েচে,
শুনিস্ নি কি ডাক পড়েচে
নিরুদ্দেশের দেশে গো!
এবার যে ওই এল সর্বনেশে গো!

ছি ছি রে ওই চোখের জল আর ফেলিস্নে!
ঢাকিস নে মুখ ভয়ে ভয়ে
কোণে আঁচল মেলিস্নে!
কিসের তরে চিত্ত বিকল,
ভাঙুক না তোর দ্বারের শিকল,
বাহিরপানে ছোট্ না, সকল
দুঃখসুখের শেষে গো!
এবার যে ওই এল সর্বনেশে গো!

কণ্ঠে কি তোর জয়ধ্বনি ফুট্বে না?
চরণে তোর রুদ্র তালে
নূপুর বেজে উঠ্বে না?
এই লীলা তোর কপালে যে
লেখা ছিল,- সকল ত্যেজে
রক্তবাসে আয় রে সেজে
আয় না বধূর বেশে গো!
ওই বুঝি তোর এল সর্বনেশে গো।

রামগড়
৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৩২১