গোধূলি

প্রাসাদভবনে নীচের তলায়
সারাদিন কতমতো
গৃহের সেবায় নিয়ত রয়েছ রত।
সেথা তুমি তব গৃহসীমানায়
বহু মানুষের সনে
শত গাঁঠে বাঁধা কর্মের বন্ধনে।
দিনশেষে আসে গোধূলির বেলা
ধূসর রক্তরাগে
ঘরের কোণায় দীপ জ্বালাবার আগে;
নীড়ে-ফেরা কাক দিয়ে শেষ ডাক
উড়িল আকাশতলে,
শেষ-আলো-আভা মিলায় নদীর জলে।
হাওয়া থেমে যায় বনের শাখায়
আঁধার জড়ায়ে ধরে;
নির্জন ছায়া কাঁপে ঝিল্লির স্বরে।

তখন একাকী সব কাজ রাখি
প্রাসাদ-ছাদের ধারে
দাঁড়াও যখন নীরব অন্ধকারে
জানি না তখন কী যে নাম তব,
চেনা তুমি নহ আর,
কোনো বন্ধনে নহ তুমি বাঁধিবার।
সেই ক্ষণকাল তব সঙ্গিনী
সুদূর সন্ধ্যাতারা,
সেই ক্ষণকাল তুমি পরিচয়হারা।
দিবসরাতির সীমা মিলে যায়;
নেমে এস তার পরে,
ঘরের প্রদীপ আবার জ্বালাও ঘরে।

১৪ মাঘ, ১৩৩৮