জাগরণ

পথ চেয়ে তো কাটল নিশি,
লাগছে মনে ভয়-
সকাল-বেলা ঘুমিয়ে পড়ি
যদি এমন হয়!
যদি তখন হঠাৎ এসে
দাড়ায় আমার দুয়ার-দেশে!
বনচ্ছায়ায় ঘেরা এ ঘর
আছে তত তার জানা-
ওগো, তোরা পথ ছেড়ে দিস,
করিস নে কেউ মানা।

যদি বা তার পায়ের শব্দে
ঘুম না ভাঙে মোর,
শপথ আমার, তোরা কেহ
ভাঙাস নে সে ঘোর।
চাই নে জাগতে পাখির রবে
নতুন আলোর মহোৎসবে,
চাই নে জাগতে হাওয়ায় আকুল
বকুল ফুলের বাসে-
তোরা আমায় ঘুমোতে দিস
যদিই বা সে আসে।

ওগো, আমার ঘুম যে ভালো
গভীর অচেতনে
যদি আমায় জাগায় তারই
আপন পরশনে।
ঘুমের আবেশ যেমনি টুটি
দেখব তারই নয়ন দুটি
মুখে আমার তারই হাসি
পড়বে সকৌতুকে-
সে যেন মোর সুখের স্বপন
দাড়াবে সম্মুখে।

সে আসবে মোর চোখের ‘পরে
সকল আলোর আগে-
তাহারই রূপ মোর প্রভাতের
প্রথম হয়ে জাগে।
প্রথম চমক লাগবে সুখে
চেয়ে তারই করুণ মুখে,
চিত্ত আমার উঠবে কেঁপে
তার চেতনায় ভ’রে-
তোরা আমায় জাগাস নে কেউ,
জাগাবে সেই মোরে।

কলিকাতা ১০ চৈত্র ১৩১২