জন্মদিনে

তোমার জন্মদিনে আমার
কাছের দিনের নেই তো সাঁকো।
দূরের থেকে রাতের তীরে
বলি তোমায় পিছন ফিরে
“খুশি থাকো”।

দিনশেষের সূর্য যেমন
ধরার ভালে বুলায় আলো,
ক্ষণেক দাঁড়ায় অস্তকোলে,
যাবার আগে যায় সে ব’লে
“থেকো ভালো”।

জীবনদিনের প্রহর আমার
সাঁঝের ধেনু- প্রদোষ-ছায়ায়
চারণ-শ্রান্ত ভ্রমণ-সারা
সন্ধ্যাতারার সঙ্গে তারা
মিলিতে যায়।

মুখ ফিরিয়ে পশ্চিমেতে
বারেক যদি দাঁড়াও আসি
আঁধার গোষ্ঠে এই রাখালের
শুনতে পাবে সন্ধ্যাকালের
চরম বাঁশি।

সেই বাঁশিতে উঠবে বেজে
দূর সাগরের হাওয়ার ভাষা,
সেই বাঁশিতে দেবে আনি
বৃন্তমোচন ফলের বাণী
বাঁধন-নাশা।

সেই বাঁশিতে শুনতে পাবে
জীবন-পথের জয়ধ্বনি-
শুনতে পাবে পথিক রাতের
যাত্রামুখে নূতন প্রাতের
আগমনী।

শান্তিনিকেতন
২৪ অক্টোবর ১৯৩৫,
[৭ কার্তিক ১৩৪২]