খেয়ালী

মধ্যাহ্নে বিজন বাতায়নে
সুদূর গগনে
কী দেখে সে ধানের ক্ষেতের পরপারে,-
নিরালা নদীর পথে দিগন্তে সবুজ অন্ধকারে
যেখানে কাঁঠাল জাম নারিকেল বেত
প্রসারিয়া চ’লেছে সঙ্কেত
অজানা গ্রামের,
সুখ দুঃখ জন্ম মৃত্যু অখ্যাত নামের।
অপরাহ্ণে ছাদে বসি’,
এলোচুল বুকে পড়ে খসি’,
গ্রন্থ নিয়ে হাতে
উদাস হ’য়েছে মন সে-যে কোন্ কবি-কল্পনাতে।
সুদূরের বেদনায়
অতীতের অশ্রুবাষ্প হৃদয়ে ঘনায়।
বীরের কাহিনী
না-দেখা জনের লাগি’ তা’রে যেন করে বিরহিণী।
পূর্ণিমা-নিশীথে
স্রোতে-ভাসা একা তরী যবে সকরুণ সারি-গীতে
ছায়াঘন তীরে তীরে সুপ্তিতে সুরের ছবি আঁকে,
উৎসুক আকাঙ্ক্ষা জেগে থাকে
নিষুপ্ত প্রহরে,
অহৈতুক বারিবিন্দু ঝরে
আঁখি-কোণে;
যুগান্তরপার হ’তে কোন্ পুরাণের কথা শোনে।
ইচ্ছা করে সেই রাতে
লিপিখানি লেখে ভূর্জ্জপাতে
লেখনীতে ভরি’ ল’য়ে দুঃখে-গলা কাজলের কালী,-
-নাম কি খেয়ালী?