কবি

(অনুবাদ)

ওই যেতেছেন কবি কাননের পথ দিয়া
কভু বা অবাক, কভু ভকতি-বিহ্ববল হিয়া।
নিজের প্রাণের মাঝে,
একটি যে বীণা বাজে,
সে বীণা শুনিতেছেন হৃদয় মাঝারে গিয়া।
বনে যতগুলি ফুল আলো করি ছিল শাখা,
কারো কচি তনুখানি নীল বসনেতে ঢাকা,
কারো বা সোনার মুখ,
কেহ রাঙা টুকটুক্,
কারো বা শতেক রঙ যেন ময়ুরের পাখা,
কবিরে বা শতেক রং যেন ময়ুরের পাখা,
কবিরে আসিতে দেখি হরষেতে হেলি দুলি
হাব ভাব করে কত রূপসী সে মেয়েগুলি।
বলাবলি করে, আর ফিরিয়া ফিরিয়া চায়,
“প্রণয়ী মোদের ওই দেখ্লো চলিয়া যায়।।”

সে অরণ্যে বনস্পতি মহান্ বিশাল-কায়া,
হেথায় জাগিছে আলো, হোথায় ঘুমায় ছায়া।
কোথাও বা বৃদ্ধবট-
মাথায় নিবিড় জট;
ত্রিবলী-অঙ্কিত দেহ প্রকাণ্ড তমাল শাল;
কোথা বা ঋষির মতো
অশথের গাছ যত
দাঁড়ায়ে রয়েছে মৌন ছড়ায়ে আঁধার ডাল।
মহর্ষি গুরুরে হেরি অমনি ভকভিভরে
সসম্ভ্রমে শিষ্যগণ যেমন প্রণাম করে,
তেমনি কবিরে দেখি গাছেরা দাঁড়াল নুয়ে,
লতা-শ্মশ্রুময় মাথা ঝুলিয়া পড়িল ভুঁয়ে।
একদৃষ্টে চেয়ে দেখি প্রশান্ত সে মুখচ্ছবি,
চুপি চুপি কহে তারা “ওই সেই। ওই কবি।”

Victor Hugo.