কবি

এতদিনে বুঝিলাম, এ হৃদয় মরু না,
ঋতুপতি তার প্রতি আজও করে করুণা।
মাঘ মাসে শুরু হল অনুকূল করদান,
অন্তরে কোন্ মায়ামন্তরে বরদান।
ফাল্গুনে কুসুমিতা কী মাধুরী তরুণা,
পলাশবীথিকা কার অনুরাগে অরুণা।

নীরবে করবী যবে আশা দিল হতাশে
ভুলেও তোলে নি মোর বয়সের কথা সে।
ওই দেখো অশোকের শ্যামঘন আঙিনায়
কৃপণতা কিছু নাই কুসুমের রাঙিমায়।
সৌরভগরবিনী তারামণি লতা সে
আমার ললাট- ‘পরে কেন অবনতা সে।

চম্পকতরু মোরে প্রিয়সখা জানে যে,
গন্ধের ইঙ্গিতে কাছে তাই টানে যে।
মধুকরবন্দিত নন্দিত সহকার
মুকুলিত নতশাখে মুখে চাহে কহো কার।
ছায়াতলে মোর সাথে কথা কানে কানে যে,
দোয়েল মিলায় তান সে আমারই গানে যে।

পিকরবে সাড়া যবে দেয় পিকবনিতা
কবির ভাষায় সে যে চায় তারই ভণিতা।
বোবা দক্ষিণ-হাওয়া ফেরে হেথাসেথা হায়,
আমি না রহিলে, বলো, কথা দেবে কে তাহায়।
পুষ্পচয়নী বধূ কিংকিণীকণিতা,
অকথিতা বাণী তার কার সুরে ধ্বনিতা!

দার্জিলিং
৮ কার্তিক, ১৩৩৮