কুয়ার ধারে

তোমার কাছে চাই নি কিছু,
জানাই নি মোর নাম!
তুমি যখন বিদায় নিলে
নীরব রহিলাম।

একলা ছিলেম কুয়ার ধারে
নিমের ছায়াতলে,
কলস নিয়ে সবাই তখন
পাড়ায় গেছে চলে।
আমায় তারা ডেকে গেল,
‘আয় গো, বেলা যায়।’
কোন্‌ আলসে রইনু বসে
কিসের ভাবনায়!

পদধ্বনি শুনি নাইকো
কখন্‌ তুমি এলে।
কইলে কথা ক্লান্তকণ্ঠে
করুণ চক্ষু মেলে
‘তৃষাকাতর পান্থ আমি’-
শুনে চম্‌কে উঠে
জলের ধারা দিলেম ঢেলে
তোমার করপুটে।
মর্মরিয়া কাঁপে পাতা,
কোকিল কোথা ডাকে,
বাবলা ফুলের গন্ধ ওঠে
পল্লীপথের বাঁকে।

যখন তুমি শুধালে নাম
পেলেম বড়ো লাজ-
তোমার মনে থাকার মতো
করেছি কোন্‌ কাজ!
তোমায় দিতে পেরেছিলেম
একটু তৃষার জল,
এই কথাটি আমার মনে
রহিল সম্বল।
কুয়ার ধারে দুপুরবেলা
তেমনি ডাকে পাখি,
তেমনি কাঁপে নিমের পাতা-
আমি বসেই থাকি।

৯ চৈত্র ১৩১২