মধু

মৌমাছির মতো আমি চাহি না ভাণ্ডার ভরিবারে
বসন্তেরে ব্যর্থ করিবারে।
সে তো কভু পায় না সন্ধান
কোথা আছে প্রভাতের পরিপূর্ণ দান।
তাহার শ্রবণ ভরে
আপন গুঞ্জন-স্বরে,
হারায় সে নিখিলের গান।

জানে না ফুলের গন্ধে আছে কোন্ করুণ বিষাদ,
সে জানে তা সংগ্রহের পথের সংবাদ।
চাহে নি সে অরণ্যের পানে,
লতার লাবণ্য নাহি জানে,
পড়েনি ফুলের বর্ণে বসন্তের মর্ম্মবাণী লেখা।
মধুকণা লক্ষ্য তা’র, তা’রি কক্ষ আছে শুধু শেখা।।

পাখীর মতন মন শুধু উড়িবার সুখ চাহে
উধাও উৎসাহে;
আকাশের বক্ষ হ’তে ডানা ভরি’ তা’র
স্বর্ণ-আলোকের মধু নিতে চায়, নাহি যার ভার,
নাহি যার ক্ষয়,
নাহি যার নিরুদ্ধ সঞ্চয়,
যার বাধা নাই,
যারে পাই তবু নাহি পাই,
যার তরে নহে লোভ, নহে ক্ষোভ, নহে তীক্ষ্ণ রীষ,
নহে শূল, নহে গুপ্ত বিষ।।

বুয়েনোস্ এয়ারিস্,
৪ ডিসেম্বর, ১৯২৪।