অবাধ

সরে যা, ছেড়ে দে পথ,
দুর্ভর সংশয়ে ভারী তোর মন পাথরের পারা।
হালকা প্রাণের ধারা
দিকে দিকে ওই ছুটে চলে
কলকোলাহলে
দুরন্ত আনন্দভরে।
ওরাই যে লঘু করে
অতীতের পুরাতন বোঝা।
ওরাই তো করে দেয় সোজা
সংসারের বক্র ভঙ্গি চঞ্চল সংঘাতে।
ওদের চরণপাতে
জটিল জালের গ্রন্থি যত
হয় অপগত।
মলিনতা দেয় মেজে,
শ্রান্তি দূর করে ওরা ক্লান্তিহীন তেজে।

ওরা সব মেঘের মতন
প্রভাতকিরণপায়ী,- সিন্ধুর তরঙ্গ অগনন,
ওরা যেন দিশাহারা হাওয়ার উৎসাহ,
মাটির হৃদয়জয়ী নিরন্তর তরুর প্রবাহ;
প্রাচীনরজনীপ্রান্তে ওরা সবে প্রথম আলোক।
ওরা শিশু, বালিকা বালক,
ওরা নারী তারুণ্যে উচ্ছল।
ওরা যে নির্ভীক বীরদল
যৌবনের দুঃসাহসে বিপদের দুর্গ হানে,
সম্পদেরে উদ্ধারিয়া আনে।
পায়ের শৃঙ্খল ওরা চলে ঝংকারিয়া
অন্তরে প্রবল মুক্তি নিয়া।
আগামী কালের লাগি নাই চিন্তা, নাই মনে ভয়,
আগামী কালেরে করে জয়।
চলেছে চলেছে ওরা চারি দিক হতে
আঁধারে আলোতে,
সম্মুখের পানে
অজ্ঞাতের টানে।
তুই সরে যা রে
ওরে ভীরু, ভারাতুর সংশয়ের ভারে।

১৮ আষাঢ়, ১৩৩৯