পিয়ারি

আসিল দিয়াড়ি হাতে
রাজার ঝিয়ারি
খিড়কির আঙিনায়,
নামটি পিয়ারি।

আমি শুধালেম তারে,
এসেছ কী লাগি!
সে কহিল চুপে চুপে,
‘কিছু নাহি মাগি।
আমি চাই, ভালো করে
চিনে রাখো মোরে,
আমার এ আললাটিতে
মন লহো ভরে।
আমি যে তোমার দ্বারে
করি আসা যাওয়া,
তাই হেথা বকুলের
বনে দেয় হাওয়া।

যখন ফুটিয়া ওঠে
যূথী বনময়
আমার আঁচলে আনি
তার পরিচয়।
যেথা যত ফুল আছে
বনে বনে ফোটে,
আমার পরশ পেলে।
খুশি হয়ে ওঠে।
শুকতারা ওঠে ভোরে,
তুমি থাক একা,
আমিই দেখাই তারে।
ঠিকমত দেখা।
যখনি আমার শোনে
নূপুরের ধ্বনি
ঘাসে ঘাসে শিহরন
জাগে যে তখনি।
তোমার বাগানে সাজে
ফুলের কেয়ারি,
কানাকানি করে তারা
‘এসেছে পিয়ারি’

অরুণের আভা লাগে
সকালের মেঘে,
‘এসেছে পিয়ারি’ বলে
বন ওঠে জেগে।
পূর্ণিমা মারাতে আসে।
ফাগুনের দোল,
‘পিয়ারি পিয়ারি’ রবে।
ওঠে উতরোল।
আমের মুকুলে হাওয়া
মেতে ওঠে গ্রামে,
চারি দিকে বাঁশি বাজে
পিয়ারির নামে।
শরতে ভরিয়া উঠে
যমুনার বারি,
কূলে কূলে গেয়ে চলে
‘পিয়ারি পিয়ারি’।