প্রত্যর্পণ

কবির রচনা তব মন্দিরে
জ্বালে ছন্দের ধূপ।
সে মায়াবাষ্পে আকার লভিল
তোমার ভাবের রূপ।
লভিলে হে নারী, তনুর অতীত তনু-
পরশ-এড়ানো সে যেন ইন্দ্রধনু
নানা রশ্মিতে রাঙা;
পেলে রসধারা অমর বাণীর
অমৃতপাত্র-ভাঙা।

কামনা তোমার বহে নিয়ে যায়
কামনার পরপারে।
সুদূরে তোমার আসন রচিয়া
ফাঁকি দেয় আপনারে।
ধ্যানপ্রতিমারে স্বপ্নরেখায় আঁকে,
অপরূপ অবগুণ্ঠনে তারে ঢাকে,
অজানা করিয়া তোলে।
আবরণ তার ঘুচাতে না চায়
স্বপ্ন ভাঙিবে ব’লে।

ওই-যে মূরতি হয়েছে ভূষিত
মুগ্ধ মনের দানে,
আমার প্রাণের নিশ্বাসতাপে
ভরিয়া উঠিল প্রাণে;
এর মাঝে এল কিসের শক্তি সে যে,
দাঁড়াল সমুখে হোমহুতাশন-তেজে,
পেল সে পরশমণি।
নয়নে তাহার জাগিল কেমনে
জাদুমন্ত্রের ধ্বনি।

যে দান পেয়েছে তার বেশি দান
ফিরে দিলে সে কবিরে।
গোপনে জাগালে সুরের বেদনা
বাজে বীনা যে গভীরে।
প্রিয়-হাত হতে পরো পুষ্পের হার,
দয়িতের গলে করো তুমি আরবার
দানের মাল্যদান।
নিজেরে সঁপিলে প্রিয়ের মূল্যে
করিয়া মূল্যবান।

১২ মাঘ, ১৩৪০