শান্তি

থাক্ থাক্ চুপ কর্ তোরা,
ও আমার ঘরে ঘুমিয়ে পড়েছে!
আবার যদি জেগে ওঠে বাছা
কান্না দেখে কান্না পাবে যে!
কত হাসি হেসে গেছে ও,
মুছে গেছে কত অশ্রুধার,
হেসে কেঁদে আজ ঘুমাল,
ওরে তোরা কাঁদাস নে আর!

কত রাত গিয়েছিল হায়,
বসেছিল বসন্তের বায়,
পুবের জানালাখানি দিয়ে
চন্দ্রালোক পড়েছিল গায়;
কত রাত গিয়েছিল হায়,
দূর হতে বেজেছিল বাঁশী,
সুরগুলি কেঁদে ফিরেছিল
বিছানার কাছে কাছে আসি!
কত রাত গিয়েছিল হায়,
কোলেতে শুকান’ ফুলমালা
নত মুখে উলটি পালটি
চেয়ে চেয়ে কেঁদেছিল বালা!
কত দিন ভোরে, শুকতারা
উঠেছিল ওর আঁখি ‘পরে,
সমুখের কুসুম-কাননে
ফুল ফুটেছিল থরে থরে।
একটি ছেলেরে কোলে নিয়ে
বলেছিল সোহাগের ভাষা,
কারেও বা ভালোবেসেছিল,
পেয়েছিল কারো ভালোবাসা!
হেসে হেসে গলাগলি করে
খেলেছিল যাহাদের নিয়ে,
আজো তারা ওই খেলা করে,
ওর খেলা গিয়েছে ফুরিয়ে!
সেই রবি উঠেছে সকালে
ফুটেছে সুমুখে সেই ফুল,
ও কখন্ খেলাতে খেলাতে
মাঝখানে ঘুমিয়ে আকুল!
শ্রান্ত দেহ, নিস্পন্দ নয়ন,
ভুলে গেছে হৃদয়-বেদনা।
চুপ করে চেয়ে দেখো ওরে-
থামো থামো, হেসো না কেঁদো না।