শান্ত

বিদ্রূপবাণ উদ্যত করি
এসেছিল সংসার,
নাগাল পেল না তার।
আপনার মাঝে আছে সে অনেক দূরে।
শান্ত মনের স্তব্ধ গহনে
ধ্যানের বীণার সুরে
রেখেছে তাহারে ঘিরি।
হৃদয়ে তাহার উচ্চ উদয়গিরি।
সেথা অন্তরলোকে
সিন্ধুপারের প্রভাত-আলোক
জ্বলিছে তাহার চোখে।
সে আলোকে এই বিশ্বের রূপ
অপরূপ হয়ে জাগে।
তার দৃষ্টির আগে
বিরূপ বিকল খণ্ডিত যত-কিছু
বিদ্রোহ ছেড়ে বিরাটের পায়ে
করে এসে মাথা নিচু।

সিন্ধুতীরের শৈলতটের ‘পরে
হিংসামুখর তরঙ্গদল
যতই আঘাত করে,-
কঠোর বিরোধ রচি তুলে তত
অতলের মহালীলা,
ফেনিল নৃত্যে দামামা বাজায় শিলা।
হে শান্ত, তুমি অশান্তিরেই
মহিমা করিছ দান।
গর্জন এসে তোমার মাঝারে
হল ভৈরব গান।
তোমার চোখের গভীর আলোকে
অপমান হল গত
সন্ধ্যামেঘের তিমিররন্ধ্রে
দীপ্ত রবির মতো।

১৪ চৈত্র, ১৩৩৮