সন্ন্যাসী

হে সন্ন্যাসী, হে গম্ভীর, মহেশ্বর,
মন্দাকিনী প্রসারিল কত-না নির্ঝর
তোমারে বেষ্টন করি নৃত্যজালে।
তব উচ্চভালে
উৎক্ষিপ্ত শীকরবাষ্পে বাঁকা ইন্দ্রধনু
রহে তব শুভ্রতনু
বর্ণে বর্ণে বিচিত্র করিয়া।
কলহাস্যে মুখরিয়া
উদ্ধত নন্দীর রুষ্ট তর্জনীরে করে পরিহাস,
ক্ষণে ক্ষণে করে তব তপোনাশ;
নাহি মনে ভয়,
দূরে নাহি রয়,
দুর্বার দুরন্ত তারা শাসন না মানে,
তোমারে আপন সাথি জানে।
সকল নিয়মবন্ধহারা
আপন অধীর ছন্দে তোমারে নাচাতে চায় তারা
বাহু তব ধরি।
তুমি মনে মনে হাসো ভৃঙ্গীর ভ্রূকুটি লক্ষ করি।

এদের প্রশ্রয় দিলে, তাই যত দুর্দামের দল
চরাচর ঘেরি ঘেরি করিছে উন্মত্ত কোলাহল
সমুদ্রতরঙ্গতালে, অরণ্যের দোলে,
যৌবনের উদ্বেল কল্লোলে।
আনে চাঞ্চল্যের অর্ঘ্য নিরন্তর তব শান্তি নাশি-
এই তো তোমার পূজা জানো তাহা হে ধীর সন্ন্যাসী।

৩ অগস্ট, ১৯৩২