সৰ্ব্ব দেহের ব্যাকুলতা কি বল্তে চায় বাণী

সর্ব্বদেহের ব্যাকুলতা কী বলতে চায় বাণী,
তাই আমার এই নূতন বসনখানি।
নূতন সে মোর হিয়ার মধ্যে দেখতে কি পায় কেউ?
সেই নূতনের ঢেউ
অঙ্গ বেয়ে পড়ল ছেয়ে নূতন বসনখানি।
দেহ-গানের তান যেন এই নিলেম বুকে টানি’।

আপনাকে তো দিলেম তা’রে, তবু হাজার বার
নূতন ক’রে দিই যে উপহার।
চোখের কালোয় নূতন আলো ঝলক দিয়ে ওঠে,
নূতন হাসি ফোটে,
তারি সঙ্গে, যতনভরা নূতন বসনখানি
অঙ্গ আমার নূতন ক’রে দেয়-যে তা’রে আনি’।

চাঁদের আলো চাইবে রাতে বনছায়ার পানে
বেদনভরা শুধু চোখের গানে।
মিলব তখন বিশ্বমাঝে আমরা দোঁহে একা,
যেন নূতন দেখা।
তখন আমার অঙ্গ ভ’রি নূতন বসনখানি।
পাড়ে পাড়ে ভাঁজে ভাঁজে করবে কানাকানি।

ওগো, আমার হৃদয় যেন সন্ধ্যারি আকাশ,
রঙের নেশায় মেটে না তা’র আশ,
তাই তো বসন রাঙিয়ে পরি কখনো বা ধানী,
কখনো জাফ্রানী,
আজ তোরা দেখ্ চেয়ে আমার নূতন বসনখানি
বৃষ্টি-ধোওয়া আকাশ যেন নবীন আস্মানী।

অকূলের এই বর্ণ, এ-যে দিশাহারার নীল,
অন্য পারের বনের সাথে মিল।
আজ্কে আমার সকল দেহে বইছে দূরের হাওয়া
সাগরপানে ধাওয়া।
আজকে আমার অঙ্গে আনে নূতন কাপড়খানি
বৃষ্টিভরা ঈশান কোণের নব মেঘের বাণী।

পদ্মা
১২ই অগ্রহায়ণ, ১৩২২