তপস্যা

সূর্য চলেন ধীরে
সন্ন্যাসীবেশে
পশ্চিম নদীতীরে
সন্ধ্যার দেশে
বনপথে প্রান্তরে
লুণ্ঠিত করি
গৈরিক গোধূলির
ম্লান উত্তরী।
পিঠে লুটে পিঙ্গল
মেঘ জটাজূট,
শূন্যে চূর্ণ হ’ল
স্বর্ণমুকুট।

অন্তিম আলো তাঁর
ওই তো হারায়
রক্তিম গগনের
শেষ কিনারায়-
সুদূর বনান্তের
অঞ্জলি-‘পরে
দক্ষিণা দিয়ে যান
দক্ষিণ করে।
ক্লান্ত পক্ষীদল
গান নাহি গায়,
নীড়ে-ফেরা কাক শুধু
ডাক দিয়ে যায়।
রজনীগন্ধা শুধু
রচে উপহার
যাত্রার পথে আনি
অর্ঘ্য তাহার।
অন্ধকারের গুহা
সংগীতহীন,
হে তাপস, লীলা তব
সেথা হ’ল লীন।
নিঃস্ব তিমিরঘন
এই সন্ধ্যায়
জানি না বসিবে তুমি
কী তপস্যায়।

রাত্রি হইবে শেষ,
উষা আসি ধীরে
দ্বার খুলি দিবে তব
ধ্যানমন্দিরে।
জাগিবে শক্তি তব
নব উৎসবে,
রিক্ত করিল যাহা
পূর্ণ তা হবে।
ডুবায়ে তিমিরতলে
পুরাতন দিন
হে রবি, করিবে তারে
নিত্য নবীন।