ভিক্ষু

হায় রে ভিক্ষু, হায় রে,
নিঃস্বতা তোর মিথ্যা সে ঘোর,
নিঃশেষে দে বিদায় রে।
ভিক্ষাতে শুভলগ্নের ক্ষয়
কোন্ ভুলে তুই ভুলিলি,
ভাণ্ডার তোর পণ্ড-যে হয়,
অর্গল নাহি খুলিলি।
আপনারে নিয়ে আবরণ দিয়ে
এ কী কুৎসিত ছলনা;
জীর্ণ এ চীর ছদ্মবেশীর,
নিজেরে সে কথা বল না।
হায় রে ভিক্ষু, হায় রে,
মিথ্যা মায়ার ছায়া ঘুচাবার
মন্ত্র কে নিবি আয় রে।

কাঙাল যে জন পায় না সে ধন,
পায় সে কেবল ভিক্ষা।
চির-উপবাসী মিছা-সন্ন্যাসী
দিয়েছে তাহারে দীক্ষা।
তোর সাধনায় রত্নমানিক
পথে পথে যাস ছড়ায়ে,
ভিক্ষার ঝুলি, ধিক্ তারে ধিক্,
বহিস নে শিরে চড়ায়ে।
হায় রে ভিক্ষু, হায় রে,
নিঃস্বজনের দুঃস্বপনের
বন্ধ, ছিঁড়িস তায় রে।

অঞ্চলে রাতি ভিক্ষার কণা
সঞ্চয় করে তারাতে,
নিয়ে সে পারানি তবু পারিল না
তিমির সিন্ধু পারাতে।
পূর্বগগন আপনার সোনা
ছড়াল যখন দ্যুলোকে,
পূর্ণের দানে পূর্ণ কামনা
প্রভাত পুরিল পুলকে।
হায় রে ভিক্ষু, হায় রে,
আপনা-মাঝারে গোপন রাজারে
মন যেন তোর পায় রে।

বাঙ্গালোর
২৩ জুন, ১৯২৮