বিদায়

আর আমি থা’ক্‌বোনারে, তল্‌পী তোল্‌;
সয় কি ভাই, দিবানিশি গণ্ডগোল?
খেয়ে বামণের রান্না, ভাই আমার আসে কান্না,
তবু পাক-ঘরে যান্‌ না, গিন্নির আগুন ছুঁলেই গোল,
(আবার) ডা’লের সঙ্গে জল মেশে না,
বেগুনপোড়া, নিমপটোল।
(হায় দুবেলা)
প’ড়েছি কি পাপফেরে, গিন্নিটি যে আব্‌দে’রে,
‘কাপড় দে, গয়না দেরে’ ফরমাসেতে হই পাগল;
‘পারিনে’ ব’ল্লে, চল্লেন বাপের বাড়ী,
ঘুরিয়ে স্বর্ণ-নথ সুগোল।
(মুখের কাছে)
গৃহ-দেব্‌তার আদেশে, যদি বা দুঃখে ক্লেশে,
সোণা দেই, সর্ব্বনেশে কৰ্ম্মকারের নানান্‌ ভো’ল,
মজুরি ষোল আনাই; বাজার যাচাই
ক’রে দেখি সব পিতল!
ধৈৰ্য্য আর ক’দিন টেকে? সাদা রং বজায় রে’খে,
গোয়ালা মনের সুখে, জল ঢে’লে দুধ ক’রে ঘোল;
ক’রে নিত্য গুরুদেবের কিরে,
(আবার) আদায় ক’রে সুদ আসল।
(হিসেব ক’রে।)
কাপুড়ে সা’ল্লে দফা, দামের নাই আপোস রফা,
টাকায় টাকা মুনাফা, মুখে বলেন “হরি বোল্‌”,
(আবার) সাঁচ্চা ঝুঁটা যায়না বোঝা,
হায়রে কি বজ্‌নিশ নকল।
(কার সাধ্য চিনে?)
ধোবা তিরিশ খান দরে, কাপড় দেয় দু’মাস পরে,
ভদ্রতা কেমন ক’রে রাখ্‌ব, ভাবি তাই কেবল;
(আবার) নাপ্তে নবীন, বর্ষে দু’দিন,
দেখা দিয়ে করেন প্রাণ শীতল।

কি সখ্য ঝি চাকরে, ডা’নে বাঁয়ে চুরি করে,
তাই আবার ব’ল্লে পরে, বাজায় অপশের ঢোল;
(আবার) চৌকিদারী কি ঝক্‌মারি,
না দিলে কয় ‘ঘটী তোল্‌!’
(নবাবের বেটা।)
ছেলেদের জ্যাঠামিটে, দেখ্‌লে দেই কড়া মিঠে,
প’ড়েছে কড়া পিঠে, তথাপি বেজায় বিটোল;
(আবার) পিঁউলি পবা, পান্‌না বাবা,
ওঁরা খাবেন রুই কাতোল।
(মর বাঁচ।)
সবাই নিজেরটি বোঝে, যা’পায় তাই ট্যাকে গোঁজে,
সুধু পরের খরচে পরের মাথায় ঢালে ঘোল;
কান্ত বলে সবাই মিলে, একবার কৃষ্ণানন্দে হরি বোল
(দু’বাহু তুলে।)।

বাউলের সুর- গড় খেমটা।